ডাস্টবিনে ময়লা ফেলার দিন শেষ হয়েছে অনেক দিনই। বাঁশি বাজিয়ে বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান পুরকর্মীরা। এই পরিষেবার জন্য এ বার কর গুনতে হচ্ছে শ্রীরামপুর শহরের বাসিন্দাদের। চলতি মাস থেকে বাড়িপিছু মাসিক ১০ টাকা করে এই ‘পরিষেবা কর’ নেওয়া চালু হয়েছে।
‘হোল্ডিং ট্যাক্স’ (বাড়িপিছু কর) দেওয়া সত্ত্বেও কেন ওই পরিষেবার জন্য আলাদা করে কর দিতে হবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দাদের একাংশ। হোটেল, রেস্তরাঁ, পানশালা, মিষ্টির দোকান, অতিথিশালা, খাবারের দোকান ইত্যাদি বাণিজ্যকেন্দ্র থেকে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট হারে ‘পরিষেবা কর’ নেওয়া অবশ্য বছর কয়েক আগেই চালু হয়েছে।
পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা জানান, সরকারি নির্দেশিকা মেনেই এই কর নেওয়া হচ্ছে। এতে যত্রতত্র আবর্জনা না ফেলে পুরকর্মীদের গাড়িতেই তা দেওয়ার ব্যাপারে সবাই সচেতন হবেন। পুরকর্মীদের মধ্যেও আরও ভাল পরিষেবা দেওয়ার দায়বদ্ধতা তৈরি হবে। এই কাজে পরিকাঠামোগত যে সমস্যা রয়ে গিয়েছে, তা মেটানোর জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। করের অঙ্ক ন্যূনতম ধার্য হয়েছে। হুগলি জেলার একাধিক শহরে ইতিমধ্যেই এই কর নেওয়া হচ্ছে।
শ্রীরামপুরে ওয়ার্ডের সংখ্যা ২৯টি। পুরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর অনুজ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, শহরে দৈনিক ৭০ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। পচনশীল বর্জ্য থেকে পুরসভার নিজস্ব প্রকল্পে সার তৈরি করা হয়। অপচনশীল বর্জ্য পাঠানো হয় বৈদ্যবাটীর সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে। বাড়ি বাড়ি পচনশীল এবং অপচনশীল বর্জ্য পৃথক করে সংগ্রহ করেন ‘নির্মল সাথী’, অর্থাৎ, পুরসভার সাফাইকর্মী। তবে, এক শ্রেণির বাসিন্দা এখনও বর্জ্য পৃথক করে দিচ্ছেন না। এই অংশের মানুষকে বোঝানো হবে। বিশেষত, বিভিন্ন আবাসনের বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে পুরসভার গাড়িতে জঞ্জাল দেওয়ার ক্ষেত্রেই অনীহা রয়েছে। এ নিয়ে আবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও বৈঠক করা হবে।
পুরকর্তারা যা-ই বলুন, শহর জুড়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে নানা জায়গায় রাস্তার ধারে যথারীতি ডাঁই হয়ে আবর্জনা পড়ে থাকে। তাতে দুর্গন্ধ শুধু নয়, দৃশ্যদূষণও হয়। এ নিয়েও বহু মানুষ প্রশ্ন তুলছেন।
পুর-পারিষদ পিন্টু নাগের দাবি, মাহেশে কাঠগোলা বাস স্টপের পাশে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং একটি ভবনের সামনে আবর্জনা ফেলা বন্ধে সেখানে সৌন্দর্যয়ান হচ্ছে। আরও কয়েকটি জায়গায় এই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দোকান, হোটেল ইত্যাদি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য আরও ৩৫টি গাড়ি কেনা হয়েছে। সুষ্ঠু ভাবে জঞ্জাল অপসারণের ক্ষেত্রে এই শহরে ৩০০ জনের বেশি সাফাইকর্মী প্রয়োজন। রয়েছেন অর্ধেক। চুক্তিভিত্তিক সাফাইকর্মী নিয়োগ করে ওই ঘাটতি পূরণের চেষ্টা চলছে।