বর্ষা আসার আগেই তিস্তায় কন্ট্রোল রুম খুলল কেন্দ্রীয় জল আয়োগ। তিস্তার সাম্প্রতিক ‘গতি’ দেখে আগেভাগে কন্ট্রোল রুম খুলেছে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। রাজ্যের সেচ দফতরের বন্যা বিষয়ক কন্ট্রোল রুম খোলার কথা জুন মাসে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় জল আয়োগ এবং সেচ দফতর তিস্তার জলের পরিমাণ নিয়ে তথ্য বিনিময়ও শুরু করেছে। সেচ দফতরের দাবি, কেন্দ্রীয় জল আয়োগ তিস্তা নিয়ে সক্রিয় হওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আগাম খবর পাওয়া এবং প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হবে।
তিস্তা ছাড়া জলঢাকাতেও নজরদারি করছে কেন্দ্রীয় জল আয়োগ। কেন্দ্রীয় জল আয়োগের দাবি, তিস্তা গতিপথ পরিবর্তন করার পর থেকেই বন্যার আশঙ্কা বেড়েছে। সিকিমের পাহাড়ি এলাকায় তিস্তার জল ধরে রাখার ক্ষমতা কমেছে। তার ফলে খানিক বৃষ্টি হলেই হুড়হুড় করে জল নেমে আসছে সমতলে। একসঙ্গে অতিরিক্ত জল নেমে আসাতেই সেবক থেকে শুরু করে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। সেবকের কাছে দু’টি গ্রামের বাসিন্দাদের সরাতে হয়েছে তিস্তা গতিপথ বদলে ফেলায়। সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় জল আয়োগের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ২০২৩ সালের বিপর্যয়ের পরে তিস্তার জলবহন ক্ষমতা কমতে কমতে চূড়ান্ত আশঙ্কার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সে কারণেই এ বছর আগেভাগে সর্তকতা নিয়েছে কেন্দ্রীয় জল আয়োগ।
সেচ দফতরের দাবি, জল আয়োগ আগে থেকে সক্রিয় হওয়ায় সুফল মিলবে। কারণ, তিস্তার পুরো গতিপথে বিশেষত উৎসের পর থেকে পাহাড়ি এলাকাগুলিতে সমীক্ষা করতে পারে তারা। যে পরিকাঠামো সেচ দফতরের নেই। সে কারণে সিকিমে ঠিক কী পরিস্থিতি, সেই তথ্য জেনে সেচ দফতরকে আগাম সতর্ক করতে পারবে জল আয়োগ। ইতিমধ্যে আয়োগের পাঠানো বার্তায় তিস্তা নদী বিপদসীমার অনেকটা নীচে থাকলেও, বর্ষার আগে যে ভাবে জল বাড়ছে তা উদ্বেগের।
সেচ দফতরের মুখ্য বাস্তুকার (উত্তর পূর্ব) কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, “যে ভাবেই হোক ৩১ মে-র মধ্যে তিস্তায় বন্যা প্রতিরোধের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় জল আয়োগ কন্ট্রোল রুম খুলেছে। সেটি নিশ্চয়ই ভাল বিষয়।”
তিস্তায় কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে সেচ দফতর। সাধারণত বর্ষার আগে নদীখাত বা আশেপাশে বন্যা ঠেকানোর কাজ হয়। সেই কাজ আটকে দিচ্ছে মাঝেমধ্যেই তোড়ে আসা জল। বর্ষার আগেই নদীর এমন আগ্রাসী মেজাজ দেখে সেচ কর্তাদের ভ্রুকুটি বাড়ছে।