• অবস্থান এখনই তুলছেন না চাকরিহারা শিক্ষকেরা! পাশে দাঁড়াল স্কুলপড়ুয়ারা, হাঁটল মিছিলে
    আনন্দবাজার | ১৮ মে ২০২৫
  • চাকরি ফেরতের দাবিতে বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান চালিয়েই যাবেন, জানিয়ে দিলেন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। রবিবারও সেই অবস্থান চলবে। তবে নতুন কোনও কর্মসূচির কথা এখনই ঘোষণা করেননি আন্দোলনকারীরা। অন্য দিকে, শনিবার আন্দোলনরত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিতে অবস্থান মঞ্চে এল বেশ কয়েক জন স্কুলপড়ুয়া। সঙ্গে ছিলেন তাদের অভিভাবকেরাও। শুধু তা-ই নয়, পদযাত্রাতেও পা মেলাল পড়ুয়ারা।

    শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত এক প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার চাকরিহারাদের বিক্ষোভে লাঠিচার্জ করেছিল পুলিশ। অনেকেই মার খেয়েছেন, রক্তাক্ত হয়েছেন। সেই ঘটনার প্রতিবাদেই বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা চাকরিহারা শিক্ষকদের অবস্থান মঞ্চে আসে। সেখানেই কিছু কর্মসূচিরও আয়োজন করা হয়েছিল।

    পড়ুয়ারা পুলিশের হাতে গোলাপ ও পেন তুলে দেয়। এ ছাড়াও, অবস্থান মঞ্চেই প্রতীকী ক্লাসরুমেরও আয়োজন করা হয়। সরকারি, বেসরকারি এবং কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় মিলিয়ে ১০টি স্কুলের কয়েক জন পড়ুয়া শিক্ষকদের অবস্থান মঞ্চে আসে। তাদের অভিভাবকেরাও সঙ্গে ছিলেন। পড়ুয়াদের কারও মুখে পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদের কথা, কেউ আবার বলছে, ‘‘আমাদের শিক্ষকদের চাকরি অন্যায় ভাবে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তার প্রতিবাদেই এসেছি।’’

    শিক্ষকদের আন্দোলনে কেন স্কুলপড়ুয়ারা? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে চাকরিহারাদের দাবি, তাঁরা কোনও পড়ুয়াকেই আসতে বলেননি। চাকরিহারা শিক্ষক মেহবুব মণ্ডলের কথায়, ‘‘আমরা কখনওই আমাদের ঢাল হিসাবে শিশুদের ব্যবহার করতে চাইনি। কিন্তু তারা আমাদের এখানে এসেছে। তাদের শিক্ষকদের অবস্থা দেখতেই ছুটে এসেছে তারা।’’

    শনিবার এবং রবিবার ছুটির দিন, ফলে বিকাশ ভবন বন্ধ থাকে। তাই সপ্তাহান্তের এই দু’দিন নতুন করে জোরালো কোনও কর্মসূচি গ্রহণ করেননি আন্দোলনকারীরা। কোনও কর্মসূচি না থাকলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কেন চুপ করে আছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন আন্দোলনকারীরা। যদিও রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিকাশ ভবনের সামনে চাকরিহারাদের অবস্থানকে ‘নাটক’ বলে মন্তব্য করেন। তাঁর কথায়, ‘‘নেতাজি ইন্ডোরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, যা ব্যবস্থা করার করবেন। সেই বিশ্বাসটা রাখলেই হয়ে যেত। এত গোলমালের দরকার ছিল না। বেশির ভাগ মানুষই বাড়ি চলে গিয়েছেন। যাঁরা টিভিতে মুখ দেখাতে চান, তাঁরাই এখনও বসে আছেন। এটা নাটক হচ্ছে।’’ এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ফিরহাদের এই মন্তব্য নিয়ে মেহবুব বলেন, ‘‘আমি মনে করি উনি ঠিকই বলেছেন। কারণ প্রকাশ্যে এক জনপ্রতিনিধি ক্যামেরার সামনে টাকা কাগজে মুড়ে নিচ্ছেন, ওই ঘটনা যদি নাটক না হয়ে বাস্তব হয়, তবে এটা অবশ্যই নাটক।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)