• চাষ করলেই রাতারাতি লাভ! জাপানের বাজার দখল করতে চলেছে হুগলির কাঁচালঙ্কা...
    আজকাল | ১৯ মে ২০২৫
  • মিল্টন সেন: রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এবার জাপানের বাজার দখল করতে চলছে হুগলির কাঁচা লঙ্কা। জাপানে কাঁচা অথচ লাল লঙ্কার বাজারে একচেটিয়া দখল ছিল ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ডের। কিন্তু সেই একই লঙ্কার দাম ভারতে তুলনায় অনেকটাই কম। তাই জাপানে স্বল্প মূল্যে লঙ্কার যোগান অক্ষুন্ন রাখতে অন্য দেশের পরিবর্তে ভারতেই আস্থা রেখেছেন জাপানিরা। এই প্রক্রিয়ার সূত্রপাত ঘটেছিল গত ২০১৯ সালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির হাত ধরে।

    তখন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র চুক্তি করেছিলেন জাপানি এক সংস্থা কাওয়াসাকি সোলার ওয়ারহাউসিং প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে। সেই সময়ে রাজ্যের লক্ষ্য ছিল কৃষকদের বাঁচানো, তাঁদের ন্যায্য মূল্য পাইয়ে দেওয়া। পাশাপাশি, বাংলাতেও সবজি এবং ফল প্রক্রিয়াকরণের ইউনিট তৈরির লক্ষ্য ছিল জাপানি সংস্থার। সেই সংস্থার তরফেই রাসায়নিক, কীটনাশক বিহীন চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় কৃষকদের। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি জাপানের বাজারে কাঁচা অথচ লাল লঙ্কা সরবরাহ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে জাপানি সংস্থা কে এস ডাবলু। পাইলট প্রজেক্টের জন্য বেছে নেয় হুগলির হরিপালকে। আট প্রজাতির লঙ্কা চাষ করা হয় হরিপালে। ইতিমধ্যেই ১৬০ কেজি লঙ্কা জাপানে পাঠানো হয়।

    জাপানের রেস্তোরাঁগুলিতে সুপ সহ অন্যান্য খাবারে লাল রঙের কাঁচা লঙ্কার চাহিদা বিপুল। সে কারণে সিঙ্গুর, হরিপাল সহ সংলগ্ন বিভিন্ন জায়গায় লঙ্কার উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হরিপালের কৃষক শুভেন্দু সিংহ রায় জানান, তিনি লঙ্কা চাষ করেছেন। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পরিমিত জল এবং জৈব সারের ব্যবহারে সম্পূর্ণ চাষ হচ্ছে পলি হাউজের মধ্যে। আগাছার উৎপাত রুখতে জমিতে পাতা হচ্ছে পলিথিন সিট। তারপর সারিবদ্ধ লঙ্কা গাছ। রোগ বা পোকার উপদ্রব নিরীক্ষণ করার জন্য রয়েছে সিসিটিভি।

    কে এস ডাবলু- এর বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার পরিচিতা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বাংলায় প্রচুর ফসল নষ্ট হয়। যে কারণেই রাজ্য সরকারের তরফে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ওয়ার হাউস তৈরি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে রাজ্যের দু’হাজারের বেশি কৃষক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী সব সময় চেয়ে এসেছেন কৃষকরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পাক। রাজ্য সরকার এবং জাপানি সংস্থার উদ্যোগে ইতিমধ্যেই সিঙ্গুরে কৃষক বাজারে জৈব প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের চাষ করানোর কাজ শেখানো হচ্ছে। আগামীদিনে সিঙ্গুরে উৎপাদিত লঙ্কা বিদেশের বাজার দখল করবে। এছাড়াও মিশন নির্মল বাংলার মাধ্যমে কৃষকদের সাহায্য করা হচ্ছে। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে জৈব সার। ফলে তাঁরা আরও লাভবান হচ্ছেন’।

    ছবি: পার্থ রাহা
  • Link to this news (আজকাল)