• ‘অম্বল হবে না’, বীরভূমে জেলা সভাপতির পদ বিলুপ্তিতে প্রতিক্রিয়া অনুব্রতর
    প্রতিদিন | ১৯ মে ২০২৫
  • দেব গোস্বামী, বোলপুর: যখন ছিলেন, দাপটের সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে নিজের পায়ের তলার জমি শক্ত করার পাশাপাশি দলের ভরসাযোগ্য হয়ে উঠেছেন। বীরভূমে তৃণমূলের সংগঠন তাঁর নিজের হাতে তৈরি করা। নির্বাচনী রাজনীতি থেকে জনসংযোগ ? সবেতেই একটাই নাম, অনুব্রত মণ্ডল। এই ছবিটাই এতদিন দেখে অভ্যস্ত ছিলেন বীরভূমবাসী। এমনকী গরু পাচার মামলায় অনুব্রত তিহার জেলে বন্দি থাকার সময়ও ‘জেলা সভাপতি’ পদটি সযত্নে রাখা ছিল তাঁর জন্য। সম্প্রতি দলে সাংগঠনিক রদবদলের জেরে বীরভূমে জেলা সভাপতির পদ অবলুপ্ত করে সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাত সদস্যের কোর কমিটিকে, যার অন্যতম সদস্য অনুব্রত মণ্ডল। পদে খোয়ানো নিয়ে অবশ্য তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই। রবিবার কোর কমিটির প্রথম বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, ”পদের জন্য আমি লালায়িত নই। পদ হারালে যে আমার অম্বল হবে, এমনটা তো নয়। মানুষের সঙ্গে থাকাটাই আমার মূল কাজ।”

    আলাদা করে কোনও পদ না থাকলেও রবিবার বোলপুরে কোর কমিটির বৈঠকে অনুব্রত মণ্ডলই ছিলেন মধ্যমণি। আগে দলের যেসব কর্মসূচি তিনি গ্রহণ করেছিলেন, সেসব অনুমোদন করেছে কোর কমিটি। এছাড়া বৈঠকের মাঝে অনুব্রতকে ফোন করেছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন, অনুব্রতর পরামর্শ মেনেই জেলায় দলের সিদ্ধান্ত নেবে কোর কমিটি। এসবের পর মুখোমুখি হয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, ”পদের জন্য আমি লালায়িত নই। পদ হারালে যে আমার অম্বল হবে, এমনটা তো নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো আমাকে রাজ্যসভায় পাঠাতে চেয়েছিলেন। আমি চাইনি। চাইলে আমি কবেই তো বিধায়ক বা সাংসদ বা মন্ত্রী হতে পারতাম। ওসব আমার লাগবে না। পদের মোহ নেই আমার। মানুষের সঙ্গে থাকতে পারাটাই আমার কাজ।”

    এদিন আরও তাৎপর্যপূর্ণভাবে অনুব্রত বললেন, ”তিহার জেলে যখন এতদিন কাটিয়েছি, কোনওদিনই অন্য দলে যাব না। অন্য দলে গেলে জেল খাটতে হত না।” অনেকেই মনে করছিলেন, পদহারা অনুব্রত হয়ত তৃণমূলে ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বেন। অথবা ছাব্বিশের আগে দলবদল করে ফেলবেন। কিন্তু তিনি যে তেমন নেতা নন, তা আবারও স্পষ্ট করে দিলেন একদা বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)