নাম-বিভ্রাট, পদের দাবি নিয়ে দুই রঞ্জিতের টানাপোড়েন
বর্তমান | ১৯ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, কালিয়াচক: শেক্সপিয়ার লিখেছিলেন, নামে কী এসে যায়! কিন্তু ওই নাম নিয়েই যত বিভ্রাট বৈষ্ণবনগরে! মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একজনের নাম ঘোষণা করল বিজেপি। অথচ একই নামের সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এক ব্যক্তি শুরু করে দিলেন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড! দল টের পাওয়ার আগে জল গড়াল অনেক দূর। বৈষ্ণবনগরে চর্চার কেন্দ্রে এখন একটাই নাম-রঞ্জিত মণ্ডল।
পদ না পেয়েও নিজেকে পদাধিকারী দাবি করে সাংবাদমাধ্যমকে ডেকে বৈঠক, দলের দায়িত্ব অক্ষরে অক্ষরে পালনের প্রতিশ্রুতি। আবার ফেসবুক স্টেটাসে ছবির সঙ্গে গান লাগিয়ে বিজেপির মণ্ডল কমিটির সাধারণ সম্পাদক দাবি করেও পোস্ট করেন স্বঘোষিত নেতা রঞ্জিত মণ্ডল। পাশাপাশি খুশিতে গ্রামের মানুষদের মধ্যে বিতরণ করলেন লাড্ডুও। তবে, কয়েকজনের কাছে টাকা তুলে সেই লাড্ডু বিলি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফেসবুকে তাঁর পোস্ট দেখে অনেকে শুভেচ্ছাও জানান। কিন্তু সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ভিডিও ও বক্তৃতা দেখেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় বৈষ্ণবনগর-৩ মণ্ডল সভাপতি বাপ্পাদিত্য সরকারের। জল অন্যদিকে গড়িয়েছে দেখে তিনি ফোন করেন বিজেপির কয়েকজন কর্মী, সমর্থককে। সব খবর নিয়ে ‘নকল’ রঞ্জিতকে ফেসবুক পোস্ট ডিলিট করার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু রঞ্জিত তো নাছোড়বান্দা। তিনি নিজেকে মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেই জাহির করেন। পরিস্থিতি ঘোরালো দেখে বিষয়টি দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়কে জানান বাপ্পাদিত্য সরকার। এরপর সাংবাদিক বৈঠক করে অজয় জানান, যে রঞ্জিত মণ্ডল নিজেকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করছেন, দলের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। অজয় বলেন, ভুল তথ্য দিয়ে মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা করা উচিত হয়নি রঞ্জিতের।
বাপ্পাদিত্যর কথায়, যে রঞ্জিত মণ্ডল নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দাবি করছেন, তিনি মণ্ডল কমিটির কেউ নন। তাঁর বাড়ি কৃষ্ণপুরে বলে জানতে পেরেছি। আমাদের দল করেন কি না, সেটাও বলতে পারছি না। কারণ মণ্ডল কমিটির পদাধিকারীদের যে তালিকা প্রকাশ করেছি, তাতে প্রত্যেক পদাধিকারীর নাম ও ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে। এক্ষেত্রে যে রঞ্জিত মণ্ডলকে সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে, তাঁর বাড়ি পারলালপুরে। তিনি এর আগেও পদে ছিলেন।
এসব কর্মকাণ্ড দেখে বিভ্রান্ত সাধারণ মানুষ ও বিজেপির নেতা, কর্মীরা। স্থানীয় বাসিন্দা টনিক মণ্ডল বলেন, ওই ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন ভাব দেখাচ্ছিলেন, যেন বিজেপির অনেক বড় নেতা। লাড্ডু বিতরণের পোস্ট দেখে তো অবাকই হয়েছিলাম। পরে বিজেপির অন্য কর্মীদের পোস্ট দেখে জানতে পারি, তিনি মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই এসব করছেন। যদিও রঞ্জিত এখনও এসবকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না। তার সাফ কথা, আমিই সাধারণ সম্পাদক। কে কী বললেন, তাতে কিছু যায় আসে না। আসল রঞ্জিতের কথায়, বিতর্ক মিটেছে এটাই অনেক। সকলকে নিয়ে কাজ করব।