বাংলাদেশ থেকে আমদানি বন্ধ, ফুলবাড়ি ও চ্যাংরাবান্ধা পোর্ট তুলে দেওয়ার আশঙ্কা
বর্তমান | ১৯ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, মেখলিগঞ্জ: বাংলাদেশ থেকে আমদানি বন্ধ। যার জেরে ঘোর দুশ্চিন্তায় ভারতের আমদানি-রপ্তানিকারকরা। ফুলবাড়ি ও চ্যাংরাবান্ধা আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর দিয়ে বৈদেশিক বাণিজ্যে ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা তাঁদের একাংশের। একইসঙ্গে তাঁদের শঙ্কা, দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের জেরে অদূর ভবিষ্যতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে সংশ্লিষ্ট দু’টি বন্দর। তা হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, দেশের স্বার্থে দিল্লির সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছি।
উত্তরবঙ্গে অবস্থিত আন্তর্জাতিক স্থলবন্দরগুলির মধ্যে ফুলবাড়ি অন্যতম। শিলিগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত এই বন্দর জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকে অবস্থিত। ওপারে বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধায় অবস্থিত সেই দেশের স্থালবন্দর। এদিন দুপুরে সংশ্লিষ্ট বন্দরে গিয়ে দেখা যায় ভারতীয় পণ্য বোঝাই কিছু লরি ওপারে যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাবান্ধা থেকে তেমন কোনও পণ্য বোঝাই লরি এপারে আসেনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত বাংলাদেশ থেকে কাটাকাপড়, তুলো, ফ্রুটজুস, কসমেটিক প্রভৃতি ফুলবাড়ি হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাড়ি দিত। দৈনিক পদ্মাপাড় থেকে প্রায় ৮-১০টি পণ্য বোঝাই ট্রাক এপারে আসত। দিল্লির নিষেধাজ্ঞার জেরে এখন বাংলাদেশ থেকে সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলি ফুলবাড়ি দিয়ে এপারে প্রবেশ করবে না।
উত্তরবঙ্গের আরএক আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর চ্যাংরাবান্ধার অবস্থাও একই। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে দৈনিক গড়ে ৯০ ট্রাক পণ্য আমদানি করে ভারত ও ভুটান। এই বন্দরে রপ্তানি বাণিজ্যের পাশাপাশি আমদানি বাণিজ্যও বেশ রমরমা। এজন্য এই ব্যবসায় প্রচুর শ্রমিক নিযুক্ত রয়েছেন। তাই আমদানি বন্ধ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গ এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ব্রজকিশোর প্রসাদ বলেন, আমদানির জন্য বাংলাদেশে প্রচুর টাকা অগ্রিম দেওয়া আছে। আমদানি বন্ধ হওয়ায় সেই টাকা ফেরত মিলবে কি না জানা নেই। অর্থাৎ প্রচুর টাকা লোকসানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তা হলেও আমরা দেশের সঙ্গে রয়েছি। দেশের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা সঠিক। এটাকে সমর্থন করছি।
একইসঙ্গে পোর্টগুলি বন্ধ করে দেওয়ার আশঙ্কাও করছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। পশ্চিমবঙ্গ এক্সপোর্টার কো-অর্ডিনেশন কমিটির রাজ্য সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অদূর ভবিষ্যতে সংশ্লিষ্ট পোর্টগুলি দিয়ে দু’দেশের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা হচ্ছে। এনিয়ে আমরা আতঙ্কিত। যদি কোনও কারণে দেশের স্বার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে এক্সপোর্ট বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে নিয়ম অনুসারে দুই সপ্তাহের জন্য ব্যবসা করার সময় দিতে হবে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ করছি। পাশাপাশি, দেশের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে তা মানব।