• জলপাইগুড়িতে এবার হাওয়াই দ্বীপের আনারস!
    বর্তমান | ১৯ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: চায়ের জেলা জলপাইগুড়িতে এবার হাওয়াই দ্বীপের আনারস! রাজ্যের উদ্যানপালন দপ্তরের উদ্যোগে মোহিতনগর ফার্মে ইতিমধ্যেই উন্নত প্রজাতির ওই আনারসের ১০ হাজার চারা লাগানো হয়েছে। তিস্তাপাড়ের জেলায় বিদেশি আনারসের ফলন কেমন হচ্ছে, তা দেখে চাষিদের বিনামূল্যে চারা দেওয়া হবে বলে দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে। হাওয়াই দ্বীপের (এমডি-২) প্রজাতির এই আনারসের চাষ জলপাইগুড়িতে সফল হলে জেলার অর্থনীতি অনেকটাই বদলে যাবে বলে মনে করছেন উদ্যানপালন দপ্তরের কর্তারা।

    জেলা দপ্তরের সহকারী অধিকর্তা খুরশিদ আলম বলেন, বিশ্ববাজারে চাহিদার নিরিখে হাওয়াই দ্বীপের (এমডি-২) আনারস প্রথম। জলপাইগুড়ি চায়ের জেলা হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এখানে আনারসের ফলনও খুব ভালো হতে পারে। প্রাথমিকভাবে মোহিতনগর ফার্মে এমডি-২ প্রজাতির ১০ হাজার টিস্যু কালচার চারা লাগানো হয়েছে। আরও পাঁচ হাজার চারা বিনামূল্যে আমরা উৎসাহী কৃষকদের ট্রায়ালের জন্য দেব।

    আনারসের অন্যান্য প্রজাতির চেয়ে এমডি-২ জাতের পার্থক্য কী? উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিকরা বলছেন, এই প্রজাতির আনারস দেখতে উজ্জ্বল সোনালি। আকারে বড় হয়। প্রতিটি আনারসের গড় ওজন দু’কেজি হয়ে থাকে। গাছের পাতায় কাঁটা থাকে না। ফলে খেত পরিচর্যায় সুবিধা। অন্য জাতের তুলনায় কম সময়ে ফলন পাওয়া যায়। এই প্রজাতির আনারসের ক্ষেত্রে গাছ লাগানোর এক বছর পর থেকেই ফল ধরতে শুরু করে। সেচ কম লাগে। এর শাঁস ও মিষ্টতা বেশি। অম্লত্ব নেই বললেই চলে। খোসা পাতলা। অনেক প্রজাতির আনারসে চোখ ভিতরের দিকে থাকে। এক্ষেত্রে চোখ থাকে বাইরের দিকে। ফলে আনারস কাটতে সুবিধা। সবচেয়ে বড় বিষয়, এই প্রজাতির আনারস দীর্ঘক্ষণ সংরক্ষণ করা যায়। খেত থেকে তোলার পর অন্তত একমাস সংরক্ষণ করা যায়। বিদেশের বাজারে খুব ভালো চাহিদা রয়েছে।

    শিলিগুড়ির কাছে বিধাননগর ও উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, ইসলামপুরে প্রচুর আনারস চাষ হয়। কিন্তু বেশিরভাগই দেশি কিংবা হাইব্রিড প্রজাতির হওয়ায় তা বিদেশের বাজারের মুখ দেখতে পারে না। একসময় জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে বেশকিছু জমিতে আনারসের চাষ হতো। কিন্তু এখন ওই সব জমিতে ক্ষুদ্র চা বাগান তৈরি হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বর্তমানে চা শিল্পের অবস্থা খুব ভালো নয়। ক্ষুদ্র বাগানগুলির অবস্থাও খারাপ। এই পরিস্থিতিতে হাওয়াই দ্বীপের আনারস জলপাইগুড়ি জেলার চাষিদের মুখে হাসি ফোটাতে পারে। উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিকরাও এমনটা মনে করছেন।

    উদ্যানপালন দপ্তরের জেলার সহকারী অধিকর্তা বলেন, আনারস একটু অম্লধর্মী মাটি পছন্দ করে। তাছাড়া যে জমিতে জৈবপদার্থের পরিমাণ বেশি এবং মাটিতে জল দাঁড়ায় না, সেখানে খুব ভালো আনারস ফলতে পারে। এক্ষেত্রে জলপাইগুড়ির মাটির চরিত্র আনারসের জন্য উপযুক্ত। 
  • Link to this news (বর্তমান)