ইসলামপুর-চোপড়া ঠান্ডা লড়াই থামাতে উদ্যোগ, কানাইয়ালালের চিন্তা দলের দুই লবির নিচুতলার কর্মীদের নিয়ে
বর্তমান | ১৯ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, ইসলামপুর: কমলাগাঁও সুজালি অঞ্চলে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাটন কোন লবির হাতে থাকবে, ইসলামপুর না কি চোপড়া? তা নিয়ে দীর্ঘদিন সুজালিতে তৃণমূলের দুই লবির কাজিয়া চলেছে। এবার তা শেষ করতে উদ্যোগী দলের জেলা নেতৃত্ব। তবে নিচুতলার নেতৃত্বের মনোভাবে আপাতত সমাধান দেখতে পাচ্ছে না রাজনৈতিক মহল।
পুনরায় দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতির পদ পেয়েছেন ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল আগরওয়াল। দলের জেলা কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান। কয়েক বছর ইসলামপুর ও চোপড়া লবির ঠাণ্ডা লড়াই চলছিল। এবার দু’দিক থেকেই জেলা কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। তাঁরা সমস্যা সমাধানের বার্তাও দিয়েছে। কানাইয়ালাল বলেন, চোপড়ার বিধায়ক তথা দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসে আলোচনা করে সুজালি ইস্যুর সমাধান বের করব।
কমলাগাঁও সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েত ইসলামপুর ব্লকের অধীনে। কিন্তু বিধানসভার দিক থেকে চোপড়ায়। অর্থাৎ সুজালির মানুষজন বিধানসভা নির্বাচনে চোপড়ার প্রার্থীকে ভোট দেন। সরকারি কাজকর্মের ক্ষেত্রে ইসলামপুর ব্লকের অধীনে কাজ হয়। তাই সুজালির ব্যাটন কার দিকে থাকবে, তা নিয়ে চোপড়া ও ইসলামপুর লবির মধ্যে কোন্দল চলে আসছে।
হামিদুল রহমানের কথায়, দু’একজন সুজালির ইস্যুকে বজায় রাখতে চাইছেন। কিন্তু সেটা হতে দেওয়া যাবে না। শীঘ্রই সুজালি ইস্যুতে আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেব।
রাজনৈতিক মহলের আলোচনা, সুজালি অঞ্চলে দলের প্রাক্তন সভাপতি আবদুল হক চোপড়ার বিধায়কের অনুগামী ছিলেন। সেই সময় সুজালির ব্যাটন চোপড়ার হাতে ছিল। একাধিক অপরাধ মামলায় অভিযুক্ত আবদুলকে ধরতে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর পুলিস তাঁর বাড়িতে হানা দেয়। তখন থেকেই ফেরার তিনি। এই সুযোগে ইসলামপুর ব্লক কমিটি আবদুলকে সরিয়ে আবদুল সাত্তারকে অঞ্চল সভাপতি করে। সাত্তার ইসলামপুর লবির ঘনিষ্ঠ। ফলে বর্তমানে সুজালির ব্যাটন ইসলামপুর লবির হাতে। এখন কোণঠাসা হয়ে আছে চোপড়া লবি। প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির স্ত্রী নুরি বেগম সুজালির পঞ্চায়েত প্রধান। একাধিক অনিয়মের অভিযোগে তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করেছে ব্লক তৃণমূল। দুই লবির মধ্যে মাঝেমধ্যেই কোন্দল জেলা নেতৃত্বের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে।
এবার চোপড়া ও ইসলামপুর লবির নেতৃত্ব সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হলেও কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে রাজনৈতিক মহল। কারণ উপর মহলের সিদ্ধান্ত নিচুতলার কর্মীরা কতটা মেনে চলবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সুজালি অঞ্চল সভাপতি আবদুল সাত্তার বলেন, জেলা সভাপতি সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে আমাদের বেশকিছু দাবি আছে। প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি ও তাঁর স্ত্রী প্রধান নুরি বেগম সরকারি একাধিক প্রকল্পে কাটমানি নিয়েছেন। সেসব ফেরত দিলে সমঝোতা হতে পারে।