বীরভূমে প্লে স্কুল ধাঁচে ক্লাস চালু করে এবার ব্যাপক সাড়া পাচ্ছে বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র
বর্তমান | ১৯ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: বেসরকারি প্লে স্কুলগুলিকে টেক্কা দিতে শুরু করেছে বীরভূম জেলার একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। বুনিয়াদি শিক্ষায় বিপ্লব আনতে জেলার একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ইতিমধ্যে প্লে স্কুলের ধাঁচে পড়াশোনা শুরু হয়েছে। নাচ-গানের মাধ্যমে চলছে পাঠদান। এক্ষেত্রে অবশ্য বাড়তি লোকবল নিয়োগের ক্ষেত্রে হাঁটেনি জেলা প্রশাসন। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের হাত ধরেই প্লে স্কুলের ধাঁচে পড়াশোনা চলছে। সেক্ষেত্রে অবশ্য মাঝেমধ্যেই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। জেলার একাধিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে প্লে স্কুলের ধাঁচে পড়াশোনা শুরু হতেই ব্যাপক সাড়া পড়তে শুরু করেছে। কেন্দ্রগুলিতে শিশুদের আনাগোনা বাড়ছে। ঘটনায় উচ্ছ্বসিত জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এক আধিকারিক বলেন, বুনিয়াদি শিক্ষার মানোন্নয়নই একমাত্র লক্ষ্য। সেইলক্ষ্যেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে প্লে স্কুলের ধাঁচে পঠনপাঠন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বাড়তি কোনও খরচ ছাড়াই সীমিত পরিকাঠামোতেই এই কাজ চলছে। এতে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের শিশুরা পড়াশুনার প্রতি আরও বেশি করে আকৃষ্ট হবে। কমবে স্কুলছুটের সংখ্যা। পাশাপাশি বুনিয়াদি স্তর থেকেই শিক্ষার মান যথেষ্ট মজবুত হবে। এক্ষেত্রে অবশ্য স্থানীয়দেরও অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।
১৯টি ব্লক মিলিয়ে জেলায় মোট ৫১৯১টিঅঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। এই মূহূর্তে জেলায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রমুখী শিশুদের সংখ্যা ২লক্ষের বেশি। এই শিশুদের একটা বড় অংশ ইতিমধ্যে পড়াশোনার জগতে পা রেখেছে। বেশিরভাগ শিশুই মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। সেইসকল শিশুদের শিক্ষার ভিত মজুবত করে তুলতে ইতিমধ্যে জেলার প্রায় ১৩০০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে অত্যাধুনিক টিভি বসেছে। এই টিভির সাহায্য খুদে পড়ুয়াদের দৃশ্যশ্রাব্য পাঠ দেওয়ার কাজ চলছে। তবে, টিভি নেই এমন কেন্দ্রগুলি অবশ্য থমকে নেই। পড়াশোনার প্রতি শিশুদের আকৃষ্ট করতে ওইসব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে প্লে স্কুলের ধাঁচে পঠনপাঠন চলছে। নাচ-গান সহ অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে ছড়া পড়ানো হচ্ছে। প্রকৃতির সঙ্গে শিশুদের সম্পর্ক নিবিড় করতে তুলতে রবীন্দ্র ভাবনায় খোলা আকাশের নীচে গাছের তলায় বসছে ক্লাস। শিশুদের চেনানো হচ্ছে গাছগাছালি। বোঝানো হচ্ছে উপকারিতা।
তবে শুধুমাত্র পড়াশোনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলি। কর্মীদের তরফে নিয়ম করে শিশুদের শরীরচর্চার পাঠও দেওয়া হচ্ছে। শেখানো হচ্ছে যোগাসন। পাশাপাশি কোনও শিশু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে অনুপস্থিত থাকলে কর্মীরা সরাসরি অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এছাড়াও প্রতি মাসে একবার মাদার্স মিটিং বসছে। রামপুরহাট-১ ব্লকের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ইন্দিরা ঘোষ বলেন, নাচ-গানের মাধ্যমে শিশুদের ছড়া পড়ানো হচ্ছে। জানতে ও বুঝতে যাতে সুবিধা হয় সেক্ষেত্রে নানা বিষয়বস্তু সামনে রেখে শিশুদের পড়ানো হয়। এছাড়াও শরীরচর্চাও শেখানো হচ্ছে। এতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের আনাগোনা ক্রমশ বাড়ছে। বন্দনা প্রামাণিক বলেন, অভিভাবকদের সচেতন করতে প্রতি মাসে একবার করে বৈঠকও করা হচ্ছে।