নিজস্ব প্রতিনিধি কৃষ্ণনগর ও সংবাদদাতা তেহট্ট: শনিবার সন্ধ্যায় ক্ষণিকের ঝড়ে নদীয়া জেলাজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যায়। কোথাও আবার গাছ ভেঙে পড়ে একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মূলত গ্রামীণ এলাকাতেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। কলা ও সব্জি চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঝড়বৃষ্টির কারণে জেলার বহু জায়গায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। শনিবার রাত থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত জেলার বিস্তীর্ণ জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। বিকেলের পর বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। মূলত নাজিরপুর, করিমপুর, চাপড়া লাগোয়া এলাকায় এই সমস্যা দেখা যায়।
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার রিজিওনাল অফিসার রথীন বিশ্বাস বলেন, অনেক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়েছিল। গাছ ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। সেসব তাড়াতাড়ি মেরামত করা হয়। রবিবার সারাদিন ধরেই আমাদের কর্মীরা কাজ করেছেন। বিকেলের দিক থেকে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়।
শনিবার বিকেল থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। সন্ধ্যার দিকে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। কৃষ্ণনগর শহর ও তার আশপাশের এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়। ফলে শহরের নানা জায়গায় হাঁটুসমান জল জমে যায়। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা জানিয়েছে, চাপড়া, তেহট্ট, নাজিরপুর ও করিমপুর এলাকায় প্রায় ২৫টি বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছিল। ফলে বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হওয়ায় মানুষকে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। তেহট্ট লাগোয়া এলাকায় ভারী বৃষ্টিতে প্রায় ১৪টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে ফসলেরও। মাঠের বেগুন, পটল, লঙ্কার পাশাপাশি আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কলাচাষিদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
করিমপুর ১ ও ২ ব্লকের বেশিরভাগ মানুষ কলা ও সব্জি চাষ করেন। নন্দনপুর পঞ্চায়েতের কিশোরপুর গ্রামের বাসিন্দা অনুপ ঘোষ বলেন, আমার প্রায় ছয় বিঘা জমির উপর কলাবাগান ছিল। তার বেশিরভাগ নষ্ট হয়েছে। শনিবারের ঝড়ে পাঁচগাছি গ্রামের বাসিন্দা রূপচাঁদ শেখের পাঁচ বিঘার কলাবাগান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কলাচাষিরা জানান, বাগানের কলা কাঁদি প্রতি ৩০০-৪০০টাকা দরে বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু শনিবারের ঝড়ে বেশিরভাগ বাগানের কলা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে কলা বিক্রি করে লাভ করা আর সম্ভব হবে না। কলার পাশাপাশি সব্জি চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তেহট্ট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ইমরান শেখ বলেন, শনিবারের ঝড়ে আমার নির্বাচনী এলাকায় কলা, বেগুন, লঙ্কা, পটল, পেঁপে ও আম বাগানের ক্ষতি হয়েছে। এডিএ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন। প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার চেষ্টা করা হবে।