পুরুলিয়া জেলার ৩৫টি পঞ্চায়েত বেহাল, সতর্ক করল নবান্ন
বর্তমান | ১৯ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অর্থ খরচে পিছিয়ে থাকা পঞ্চায়েতগুলিকে ‘অ্যাডভান্স প্ল্যানিং’ করে রাখার নির্দেশ দিল নবান্ন। সম্প্রতি পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অর্থ খরচে পিছিয়ে থাকা ১০০টি পঞ্চায়েতকে নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের পদস্থ কর্তারা। পিছিয়ে থাকা পঞ্চায়েত এলাকার বিডিও, সংশ্লিষ্ট জেলার ডিপিআরডিও ও পঞ্চায়েত দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকরা ছিলেন। সেখানেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
চলতি অর্থ কমিশনের মেয়াদ রয়েছে আর এক বছর। ২০২১ সালে শুরু হওয়া পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ শেষ হচ্ছে। তারপর ১ এপ্রিল থেকে ষোড়শ অর্থ কমিশন কার্যকর হবে। তাই এখন থেকেই পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের পড়ে থাকা অর্থের খরচে গতি বাড়ানোর কাজ শুরু করল রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, গ্রামীণ পরিকাঠামো খাতে অর্থ কমিশনের এই টাকা খরচ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা চলছে রাজ্যে। সব জেলায় সমানভাবে কাজের অগ্রগতি হচ্ছে না। ফলে অর্থ কমিশনের দেওয়া টাকা পুরো খরচ করার আগেই পরের বরাদ্দ চলে আসছিল। চলতি অর্থবর্ষের দু’টো কিস্তির টাকা এখনও পাবে রাজ্য। তাই চলতি অর্থবর্ষের মধ্যে পুরো অর্থের ব্যবহার করে ফেলতে চাইছে রাজ্য। টাকা খরচের ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেই কারণে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য জেলাগুলিকে ‘স্কিম ব্যাঙ্ক’ করে রাখতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
পঞ্চায়েত দপ্তর সূত্রের খবর, রাজ্যের ১০০টি পিছিয়ে থাকা পঞ্চায়েতের মধ্যে পুরুলিয়ার রয়েছে ৩৫টি। টেন্ডার নিয়ে নেতাদের মধ্যে মতানৈক্য, ঠিকাদারদের থেকে অতিরিক্ত কমিশনের দাবি সহ নানা কারণে পঞ্চায়েতগুলিতে পিছিয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পিছিয়ে থাকা পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে ঝালদা-১ ব্লকের মারুমাসিনা, ঝালদা-২ ব্লকের চেকা, বলরামপুরের ঘাটবেড়া-কেরোয়া, রঘুনাথপুর-২ ব্লকের নুতনডি সহ একাধিক পঞ্চায়েতের অবস্থা তলানিতে।
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, শেষ মুহূর্তে যাতে তাড়াহুড়ো করতে না হয়, তাই এখন থেকেই পরিকল্পনা করে রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। কোথায় ড্রেন হবে, কোথায় রাস্তা, জলপ্রকল্প হবে সেইসবের চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে করে রাখার নির্দেশ রয়েছে। ব্লকের বিডিওরা ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
পঞ্চায়েত দপ্তরের এক কর্তা বলেন, পঞ্চায়েতগুলিতে অনেক ক্ষেত্রে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ব্যাপক জটিলতা তৈরি হয়। কাজও পিছিয়ে যায়। তা যাতে না হয়, তাই এখন থেকেই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ওয়ার্ক অর্ডারও দিয়ে রাখার নির্দেশ হয়েছে। পুজোর আগে টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ অন্তত ৮০ শতাংশ করে রাখার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। ডিসেম্বরের পর একটি প্রকল্পের কাজও যাতে পড়ে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।