দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে মৃতদেহ তোলা হল শিশুকন্যার
বর্তমান | ১৯ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, কালনা ও নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: আদালতের নির্দেশে এক শিশুকন্যার মৃতদেহ মাটি খুঁড়ে তোলা হল। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির বাঁশবেড়িয়ার ত্রিবেণী শ্মশানঘাটে। কালনার বাসিন্দা ওই সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যার জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল ২৬ এপ্রিল। কালনা মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে তার দেহ ত্রিবেণী শ্মশানঘাটের কাছে সমাধিভূমিতে কবর দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েকদিন পরে ময়নাতদন্ত সঠিক হয়নি বলে অভিযোগ তুলে মৃতার পরিবার পুলিসের মাধ্যমে আদালতের দারস্থ হয়। এরপর কালনা মহকুমা আদালত দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই আদেশেই প্রায় ২০ দিন পরে মৃতদেহটি মাটি থেকে তোলা হয়েছে।
ত্রিবেণী শ্মশান কর্তৃপক্ষ ও মগরা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন কালনা থানার পুলিস ও একজন ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে ওই মৃতদেহ খুঁড়ে তোলা হয়। কালনা থানার পুলিস তা নিয়ে গিয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে। কালনা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার ঠাকুমা ময়নাতদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁর দাবি, নাতনির শরীরে জলে ডুবে যাওয়ার লক্ষণ ছিল না। পাশাপাশি, কালনা মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের সঠিক পরিকাঠামো নেই বলেও তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন।
স্থানীয় সূত্রেও জানা গিয়েছে, কালনা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করানোর জন্য কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই নেই। এনিয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। রবিবার মৃতার বাবা ত্রিবেণীতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু পরে আমাদের মনে হয়েছে, জলে পড়ে যাওয়াটা সাধারণ নাও হতে পারে। আমরা তাই আদালতের কাছে গিয়েছিলাম। আদালতই দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। আমার মনে হয়, মেয়েকে মেরে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। আমার মেয়ের সঙ্গে যদি কোনও অন্যায় হয়ে থাকে, তবে তার বিহিত করতে হবে। সেই কারণেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। কালনা থানার পুলিস জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশে যথাযথভাবে পালনের কাজ শুরু হয়েছে।
শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৬ এপ্রিল সে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। বাড়ির কাছেই একটি পুকুর থেকে সেদিন তাকে উদ্ধার করা হয়। দ্রুত তাকে কালনা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। সেখানেই তার ময়নাতদন্ত হয়। ৬ মে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি তুলে কালনা থানায় অভিযোগ হয়। ১৬ মে আদালত মৃতদেহ ত্রিবেণী শ্মশান থেকে তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেয়।