• ব্ল্যাকমেল! পোর্টালে নালিশেই মুছে যাবে শিশুদের অশ্লীল ছবি
    বর্তমান | ১৯ মে ২০২৫
  • স্বার্ণিক দাস, কলকাতা: অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের হাত ধরে বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই। সাধারণ মানুষ বহু সুফল যেমন পাচ্ছে, তেমনই অপরাধপ্রবণ লোকজন, সাইবার প্রতারক, দুষ্কৃতীদের হাতে এসেছে কুকর্ম করার নিত্যনতুন কৌশল। তাই আজ নেটমাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের অশ্লীল ছবি, ভিডিও, চাইল্ড পর্নোগ্রাফির ছড়াছড়ি। শিশুর ছবি ব্যবহার করে ভুয়ো অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শিশুর ভবিষ্যৎ, সামাজিক সম্মানের কথা ভেবে ব্ল্যাকমেলের শিকার হচ্ছেন অভিভাবকরা। এই ধরনের সমস্যা এবার মিটবে ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই। মার্কিন সংস্থা ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিল্ড্রেন’ (এনসিএমইসি)-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। নির্দিষ্ট পোর্টালে গিয়ে আপত্তিকর ছবি বা ভিডিওটি পোস্ট করলে তা ইন্টারনেট থেকে মুছে দেবে এনসিএমইসি। ইতিমধ্যে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম পোর্টালে এই বিশেষ ‘ফিচার’ যুক্ত হয়েছে। 

    সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বিশ্বজুড়ে চাইল্ড পর্নোগ্রাফির মারাত্মক চাহিদা। তা মাথায় রেখে সাইবার প্রতারকরা প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে তৈরি করছে ভুয়ো অশ্লীল ছবি ও ভিডিও। সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার পোস্ট করা সন্তানের ছবি সংগ্রহ করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে বানানো হচ্ছে অশ্লীল ভিডিও। তারপর তা লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়ে করে দেওয়া হচ্ছে পর্নোগ্রাফি সাইটে। এই অপরাধে লাগাম পরাতে ২০১৯ সালে আমেরিকায় গড়ে ওঠে এনসিএমইসি। তাদের তৎপরপতায় এখনও পর্যন্ত বিশ্বের লক্ষাধিক শিশুর ভুয়ো এবং অশ্লীল ভিডিও মুছে দেওয়া হয়েছে নেটদুনিয়া থেকে। ভারতে চাইল্ড পর্নোগ্রাফি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও সাইবার অপরাধীরা নাবালক-নাবালিকার ছবি ‘সুপার ইম্পোজ’ করেই ক্ষান্ত থাকছে না। ওয়েবসাইট থেকে রোজগারের পাশাপাশি তারা অভিভাবককে ব্ল্যাকমেল করছে। দাবি মতো টাকা না পেলে ভিডিও ‘ভাইরাল’ করে দেওয়ার হুমকি। দেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০০টি ‘ডিজিটাল চাইল্ড অ্যাবিউজ’-এর অভিযোগ হচ্ছে। 

    এক্ষেত্রে কীভাবে এগতে হবে? পোর্টাল খুলে ‘রিপোর্ট সাসপেক্ট’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর ‘রিপোর্ট অ্যাবিউজ টু এনসিএমইসি’ ক্লিক করলেই খুলে যাবে একটি পেজ। সেখানে লেখা থাকবে, ‘টেক ইট ডাউন’। ১৮ বছরের কমবয়সি কারও আপত্তিকর ছবি বা ভিডিও সেখানে দিলেই ঘণ্টাখানেকের মধ্যে নেটদুনিয়া থেকে তা সরে যাবে। প্রজেক্টটির নাম ‘টেক ইট ডাউন’। কয়েকটি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দিলেই (বয়স, কতদিন ধরে ছবি বা ভিডিওটি ভাইরাল, আপনি নিজেই সেগুলি পোস্ট করেছেন কি না ইত্যাদি) ছবি বা ভিডিও ওই পোর্টালে ‘আপলোড’-এর অপশন আসবে। ‘আপলোড’ হওয়া প্রতিটি ছবি ও ভিডিওর ভিত্তিতে তৈরি হবে ‘আলফা-নিউমেরিক আইডি’। এনসিএমইসি’র পরিভাষায় একে বলা হচ্ছে ‘হ্যাশ ভ্যালু’। যা ভাইরাল হওয়ায় অশ্লীল ছবি ও ভিডিও মোছার মূল চাবিকাঠি। 
  • Link to this news (বর্তমান)