• শিশুমৃত্যু কমলেও প্রসূতি মৃত্যুর হার বৃদ্ধিতে উদ্বেগ বাংলায়
    বর্তমান | ১৯ মে ২০২৫
  • বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: প্রকাশিত হল প্রসূতি মৃত্যু ও সদ্যোজাত শিশুমৃত্যু সংক্রান্ত বহু প্রতীক্ষিত কেন্দ্রীয় সমীক্ষা রিপোর্ট। স্যাম্পেল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (এসআরএস) বুলেটিন শীর্ষক এই সমীক্ষা রিপোর্টকে প্রসূতি ও সদ্যোজাত শিশুমৃত্যু সংক্রান্ত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সূত্র বলে মনে করা হয়। যদিও এই রিপোর্টে অতি সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান থাকে না। যেমন, চলতি মাসে প্রকাশিত এসআরএস রিপোর্টে মিলেছে ২০১৯-২১ সালের পরিসংখ্যান। আর তাতেই বাংলায় প্রসূতি মৃত্যুর উদ্বেগজনক চিত্র আরও স্পষ্ট হয়েছে। এমনকী, বাংলায় প্রসূতি মৃত্যুর হার কেন্দ্রীয় হারের চেয়েও বেশি! আগের এসআরএস বুলেটিন অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের প্রসূতি মৃত্যুর হার (প্রতি ১ লক্ষ প্রসবে মায়ের মৃত্যু) ছিল ১০৩। সদ্য প্রকাশিত এসআরএস রিপোর্টে তা বেড়ে হয়েছে ১০৯। যদিও এক্ষেত্রে জাতীয় গড় বাংলার চাইতে অনেকটা‌ই কম— ৯৩। এমনকী, এক্ষেত্রে শেষের দিকে থাকা ছ’-সাতটি রাজ্যের মধ্যে ঠাই হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের। 

    এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যভবনকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে সদ্যোজাত শিশুমৃত্যুর পরিসংখ্যান। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্তাদের সূত্রে খবর, সদ্য‌ প্রকাশিত এসআরএস বুলেটিনে বাংলায় সদ্যোজাতর মৃত্যু হার (আইএমআর বা ইনফ্যান্ট মর্টালিটি রেট, প্রতি ১ হাজার প্রসবে ১ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুমৃত্যু) কিছুটা কমেছে। ১৯ থেকে কমে হয়েছে ১৮। এক্ষেত্রে জাতীয় গড় অবশ্য অনেকটাই বেশি (২৭)। ২০১৯-২১ আর্থিক বছরের এই হিসেব অনুযায়ী, এক্ষেত্রে বড় রাজ্যগুলির মধ্যে সেরার তালিকায় প্রথম পাঁচে চলে এসেছে পশ্চিমবঙ্গ। সামনে রয়েছে কেরল, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটক।   

    উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ২০১৯-২১ সময়মীমার মধ্যেই এসেছে করোনা। ফলে আর পাঁচটা বছরের মতো নয় এই চিত্র। তবে এটাও ঘটনা, করোনা ছড়িয়েছে গোটা দেশেই। তাই করোনা বলে রিপোর্টে মৃত্যু হার বেশি বা কম এসেছে, সেই যুক্তি দেখিয়ে নিজেদের অবস্থান নিরাপদ করা যাবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাহলে হঠাৎ প্রসূতিৃ মৃত্যু বাড়ল কেন? স্বাস্থ্যভবনের অভ্যন্তরীণ কাটাছেঁড়ায় উঠে আসছে দু’টি আশঙ্কার কথা। প্রথমটি  হল, সি-সেকশন বা সিজারিয়ান হু হু করে বাড়ছে। দ্বিতীয় আশঙ্কার কথা হল, লাগামছাড়া গতিতে অসুরক্ষিত হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে গর্ভপাতের সময় মৃত্যু। উদ্বেগের বিষয় হল, স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে কিশোরী বা প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের গর্ভপাত সংক্রান্ত কোনও নথিবদ্ধ তথ্য নেই।
  • Link to this news (বর্তমান)