অভাবের সঙ্গে লড়ে ভালো ফল, জীবনে সফল হতে যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন ৩ পড়ুয়া
বর্তমান | ১৯ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: নামখানার শিবনগরের বাসিন্দা অপরূপা বারুইয়ের বাবা রাজমিস্ত্রি ছিলেন। অসুস্থতার কারণে এখন কাজ করতে পারেন না। সংসারে প্রবল অর্থাভাব। তবে তা বলে পড়াশোনা থামিয়ে দেননি অপরূপা। উচ্চমাধ্যমিকে ৪৬০ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন। চান শিক্ষিকা হতে। সংসারের হাল ফেরাতে। সাগরের ঘোড়ামারা গ্রাম পঞ্চায়েতের মন্দিরতলার বাসিন্দা পবিত্র কারক ছোটবেলা থেকেই বাবাকে কাছে পান না। লঞ্চচালক বাবা রোজগারের কারণে সবসময়ই বাইরে থাকেন। যদিও বাবার অনুপস্থিতি পড়াশোনায় প্রভাব ফেলেনি। মাধ্যমিকে ৪৫৯ নম্বর পেয়েছেন পবিত্র। চান অধ্যাপক হতে। নামখানার রাজনগরের ছয় মাইলের মিনারা পারভিনের বাবা হাটে মশলা ফেরি করেন। নিম্নবিত্ত পরিবার। তবে মেয়েটি মনের জোরে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন। মাধ্যমিকে পেয়েছেন ৪৫৫ নম্বর। চান গবেষণা করতে।
অপরূপা বারুই পড়াশোনায় মেধাবী। বাবা অশক্ত বলে মাধ্যমিকের স্কলারশিপের টাকায় পড়াশোনার খরচ চালান মেয়ে। পড়ার পাশাপাশি সংসারের কাজ করেন। গৃহপালিত গরু, ছাগল, মুরগি দেখভাল করেন। চাষের সময় জমিতে ধানও রুইতে যান। এর মধ্যেই চালান পড়াশোনা। রাজনগর বিশ্বম্ভর হাই স্কুলের এই ছাত্রী আর্টস নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছেন। প্রিয় বিষয় ভূগোল। হেল্থ অ্যান্ড ফিজিক্যাল এডুকেশন নিয়ে পড়ার ইচ্ছে। অভাবের ফলে পড়া কিভাবে চালিয়ে যাবেন তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন অপরূপা।
পবিত্র কারকের বাবা কাকদ্বীপের মুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চ চালান। বাড়িতে যাওয়ার সময় পান না। ছোটবেলা থেকে বাবার লড়াই সামনে থেকে দেখছেন পবিত্র। পরিবারের কষ্ট দূর করতে ভবিষ্যতে অধ্যাপক হতে চান। ইতিহাস প্রিয় বিষয়। মিনারা পারভিনের বাবা গ্রামের হাটে গিয়ে মশলা বিক্রি করেন। মিনারা লক্ষ্য স্থির করে লড়াই চালাচ্ছেন। নিজের উপর বিশ্বাসের জোরে এগিয়ে যাবেন বলে ভাবেন। লক্ষ্য, জীববিদ্যা নিয়ে গবেষণা করা। তাই বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছেন। - নিজস্ব চিত্র