নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: দু’দিন আগে দমদমে রাস্তার পাশ থেকে আধপোড়া মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। রবিবার পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম সৌরভ দাস(২৫)। তাঁর বাড়ি ঘোলা থানার উত্তর নাটাগড় এলাকায়। তবে এখনও খুনের রহস্যের কিনারা করতে পারেনি পুলিস। রহস্য বরং আরও দানা বাঁধছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে খবর, উত্তর নাটাগড়ের ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান সৌরভ স্নাতক হওয়ার পর বাড়িতেই চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে লিঙ্গ পরিবর্তনের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন। তা নিয়ে পরিবারের সঙ্গে তাঁর মতান্তর হয়েছিল। তারপরও লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য তিনি হরমোন থেরাপি শুরু করেছিলেন। পড়ার নাম করে মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন দিন দুয়েকের জন্য। তখন তাঁর মোবাইল বন্ধ থাকত। ১৫ মে বিকেল ৩টে নাগাদ তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি বাড়ির লোকজন। ১৬ তারিখ সকালে দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে যাওয়ার পথে মিলিটারি ক্যাম্পের সীমানা প্রাচীরের পাশ থেকে তাঁর বস্তাবন্দি অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের সদস্যরা তখনও কিছু জানতেন না। পরদিন সকাল পর্যন্ত কোনও খোঁজ না পেয়ে দুপুর দেড়টা নাগাদ ঘোলা থানায় গিয়ে মিসিং ডায়েরি করেন তাঁরা। বিকেলে পুলিস তাঁদের ওই আধপোড়া দেহের ছবি দেখায়। সংশয় কাটিয়ে রবিবার সকালে পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহ শনাক্ত করেন।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মৃতদেহ যেখানে পড়েছিল, সেই রাস্তা দিয়ে যাওয়া অটো, টোটো সহ অন্যান্য গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মৃতের ফোনের শেষ টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখার পাশাপাশি তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিস। যে বন্ধুদের সঙ্গে তিনি সময় কাটাতেন ও নাচের আসরে যেতেন, তাঁদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। তবে পুলিস একপ্রকার নিশ্চিত, দমদম থানা এলাকার কোথাও খুন করে দেহ ওই তুলনামূলক ফাঁকা রাস্তায় আনা হয়। এরপর দেহ লোপাট করতে আবর্জনার পাশে ফেলে তেল বা দাহ্য কোনও তরল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। বারাকপুর কমিশনারেটের ডিসিপি (দক্ষিণ) অনুপম সিং বলেন, ‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’