এই সময়: পাঞ্জাব থেকে উত্তরপ্রদেশ হয়ে ঝাড়খণ্ড এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত দীর্ঘ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত হয়েছে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা। তারই প্রভাবে বাংলায় মেয়াদ বাড়ল বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বৃষ্টির।
কয়েক দিন আগে আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছিল, দক্ষিণ ও উত্তর — রাজ্যের দুই প্রান্তেরই বিভিন্ন জেলায় আজ, সোমবার পর্যন্ত দমকা হাওয়া ও ঝড়–বৃষ্টির আবহ জারি থাকবে।
তবে রবিবার আবহাওয়া দপ্তর যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে, তাতে জানানো হয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে ঝড়–বৃষ্টির আবহ চলবে ২২ মে অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। উত্তরবঙ্গে এমন আবহাওয়া থাকবে বুধবার অর্থাৎ ২১ মে পর্যন্ত।
মে মাস পড়লেই বঙ্গোপসাগর নিয়ে আলাদা সতর্কতা থাকে আবহবিদদের। মে–র বঙ্গোপসাগর ঘূর্ণিঝড়ের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। এ বারও ২৩–থেকে ২৮ মে–র মধ্যে বঙ্গোপসাগরে তেমনই একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরির আশঙ্কা রয়েছে বলেই খবর ছড়িয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
রবিবার পর্যন্ত মৌসম ভবন এমন কোনও সতর্কতা জারি করেনি। বঙ্গোপসাগরের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে বলেই উল্লেখ করেছেন আবহবিদরা। তবে ২৩ মে পর্যন্ত ওই ঘূর্ণাবর্তর শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই জানানো হয়েছে।
তবে, দেশের পূর্ব দিকের বঙ্গোপসাগরে না হলেও পশ্চিমের আরব সাগরে ২২ ও ২৩ মে ঘূর্ণিঝড় তৈরির একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছে মৌসম ভবন।
সামনের কয়েক দিন দক্ষিণবঙ্গের পরিস্থিতি কেমন থাকবে সেই বিষয়ে আবহবিদরা জানিয়েছেন, আজ সোমবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ঘণ্টায় ৪০–৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া এবং বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা খুব বেশি।
দক্ষিণবঙ্গের বাকি আটটি জেলায় ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিলোমিটার বেগে জোরালো হাওয়া এবং হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটা জেলাতেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বৃষ্টি ও জোরালো হাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহবিদরা।
অন্য দিকে উত্তরবঙ্গে আজ সোমবার মালদা এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘণ্টায় ৪০–৫০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া এবং বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
উত্তরবঙ্গের বাকি জেলাগুলোর প্রায় সর্বত্রই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং জোরালো হাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। এর মধ্যে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গায় ৭–১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত অর্থাৎ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গে দুর্যোগ বাড়বে। এ দিন জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভিন্ন জায়গায় ঘণ্টায় ৫০–৬০ কিলোমিটার গতিতে ঝড়ো বাতাস বয়ে যাওয়ার এবং ৭–১১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত অর্থাৎ ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।