• অন্নপ্রাশনের নিমন্ত্রণে খেতে গিয়ে রাস্তায় খুন তৃণমূল নেতা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৯ মে ২০২৫
  • কয়েক মাস আগেই ইংরেজবাজারের তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকারকে গুলি করে খুন করা হয়। তারপর কালিয়াচকে এক তৃণমূল কর্মীকে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়। এই দুই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের মালদহে খুন হলেন এক তৃণমূল নেতা। রবিবার রাতে মালদহের ইংরেজবাজার থানায় মহদিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বারোদুয়ারি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এক আত্মীয়ের বাড়ি নিমন্ত্রণ খেতে যাচ্ছিলেন তৃণমূল নেতা সুবল ঘোষ। সেই সময় তাঁকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপ মারা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও গভীর ক্ষতের জেরেই মৃত্যু হয় সুবলের। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের পরিবারের এক মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, শীঘ্রই অভিযুক্তদের ধরা হবে।

    মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার তাদের এক আত্মীয়ের সন্তানের অন্নপ্রাশন ছিল। সেখানে যাচ্ছিলেন সুবল। রাস্তায় সুবলকে একা পেয়ে তাঁর উপর হামলা করে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে তাড়া করা হয়েছিল তৃণমূল নেতাকে। তারপর একের পর এক হাঁসুয়ার কোপ পড়ে সুবলের শরীরে। রাস্তা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় সুবলকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা সুবলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    এই ঘটনায় বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছে মৃতের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, সুবল তৃণমূলের সক্রিয় নেতা ছিলেন। এলাকায় তৃণমূলের হয়ে প্রচার চালানোর পাশাপাশি সমস্ত কর্মসূচিতেও যোগদান করতেন। মূলত সেই কারণেই সুবলের উপর রাগ ছিল বিজেপি নেতাদের। সেই আক্রোশ থেকেই সুবলকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের সদস্যদের।

    মালদহ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস কুন্ডু বলেন, ‘সুবল ঘোষ দলের সম্পদ ছিলেন। এলাকার বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে কুপিয়ে খুন করেছে। আমরা চাই, দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করুক পুলিশ।’ যদিও এই অভিযোগ মানতে চায়নি বিজেপি। বিজেপির দক্ষিণ মালদহের সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, ‘এটি একটি পারিবারিক বিবাদ। আগে শান্ত ছিল মহদিপুর। কিন্তু যত বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসছে, ততই উত্তপ্ত হচ্ছে ওই এলাকা।

    চলতি বছর জানুয়ারি মাসের শুরুতে ইংরেজবাজার পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দুলাল সরকার ওরফে বাবলা। মহানন্দাপল্লিতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন দুলাল। এই ঘটনার তদন্তে নেমে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সম্প্রতি দুলাল সরকারের স্ত্রী চৈতালী ঘোষ সরকারকে জেলা কমিটির চেয়ারম্যানের পদে বসিয়েছে তৃণমূল। দুলাল খুনের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কালিয়াচকের নয়া বস্তি এলাকায় গুলি মেরে খুন করা হয় তৃণমূল কর্মী হাসান শেখকে। সেই ঘটনায় জখম হন কালিয়াচক এক নম্বর ব্লকের নওদা যদুপুর এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)