সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টানা তেরোদিন ধরে বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আন্দোলনকারীরা। পালটা ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে চাকরিহারা শিক্ষকদের উদ্দেশে শান্তি বজায় রাখার বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, “হিংসাত্মক হলে আন্দোলনের আসল সারমর্ম হারিয়ে যায়।”
দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সোমবার অভিষেক বলেন, “আন্দোলন করা, প্রতিবাদ করার অধিকার সকলের রয়েছে। আমি আন্দোলনকে ছোট করতে চাই না। আমি চাই না আন্দোলনকে রাজনৈতিক রঙে রাঙানো হোক। আন্দোলনকারীদের কাছে আমার আর্জি আন্দোলন কখনও হিংস্র, উগ্র হয় না। আমি বেশ কয়েকটি ভিডিও দেখেছি। গেট ভাঙার চেষ্টা করছিলেন আন্দোলনকারীরা। গান্ধীজি অহিংসার কথা বলেছেন। ১০০ দিনের কাজের টাকার জন্য দিল্লি গিয়েছিলাম। চুলের মুঠি ধরে মহিলা প্রতিনিধিদের বের করে দিয়েছে। পরদিন রাজভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করি। হিংসার পথ অবলম্বন করিনি। আন্দোলন যেন হিংস্র না হয়। আন্দোলন যেন জোরজবরদস্তি বলপ্রয়োগ করে না হয়। হিংসাত্মক হলে আন্দোলনের আসল সারমর্ম বা এসেন্স হারিয়ে যায়। আন্দোলন তো সকলে করতে পারেন। সরকার অবস্থান স্পষ্ট করেছে। বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রাখুন। আজ নয় কাল আমার দৃঢ় বিশ্বাস বিচার হবেই।”
প্রসঙ্গত, নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এক কলমের আঁচড়ে চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। হাজারও টানাপোড়েনের পর আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারবেন। বেতনও পাবেন। তবে অশিক্ষক কর্মীরা আপাতত চাকরিহারা। আবারও নতুন করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এসএসসিকে। তবে আর পরীক্ষা দিতে নারাজ ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা। বিকাশ ভবনে টানা অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দফায় দফায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। ওইদিন সন্ধ্যায় বিকাশ ভবনে থাকা একাধিক দপ্তরের সরকারি কর্মীদের ঘেরা করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। সরকারি কর্মীদের মধ্যে কেউ অন্তঃসত্ত্বা তো কারও বাড়িতে রয়েছেন অসুস্থ মা। বাড়ি ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন সরকারি কর্মীরা। বাধ্য দিয়ে পুলিশ তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা করে। সেই সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জও করে। এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর চাপানউতোর।