‘বিশ্বাসই হচ্ছে না’, কাশ্মীরের ভ্রমণসঙ্গী পাক চর জ্যোতির স্বরূপ জেনে বিস্মিত বাংলার ভ্লগার
প্রতিদিন | ১৯ মে ২০২৫
শেখর চন্দ্র, আসানসোল: জনপ্রিয় ইউটিউবার দলের সদস্য সকলে। একেকজনের ফলোয়ার কয়েক লক্ষ। সেই সূত্রেই একে অপরকে চেনেন, জানেন। কখনওসখনও দেখাসাক্ষাৎ, একসঙ্গে বেড়ানো হয়েছে। সময়সুযোগ বুঝে আবার একসঙ্গে কলকাতার বিখ্যাত বিরিয়ানিলর আউটলেটে গিয়ে খাওয়াদাওয়াও করেছেন। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও টের পাননি যে লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার পাওয়া ইউটিউবার এসবের আড়ালে এমন ঘৃণ্য কাজ করতে পারেন। পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি! হরিয়ানার কন্যা জ্যোতি মালহোত্রার গ্রেপ্তারির খবর শুনে চোখ কপালে তুলছেন বাংলার ভ্লগার সৌমিত ভট্টাচার্য। এই মুহূর্তে তিনি নিজের ভ্লগ তৈরির কাজে রয়েছেন আন্দামানে। সেখান থেকে ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’কে ফোনে নিজের বিস্ময় চেপে রাখতে পারলেন না। নিজেকেও কি বিপন্ন মনে করছেন? না, তা মোটেই নয়। নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ভ্লগার সৌমিত।
আসানসোলের সৌমিত ভট্টাচার্য এই মুহূর্তে অন্যতম জনপ্রিয় ইউটিউবার। সাবস্ক্রাইবার ৬ লক্ষের বেশি। ভেলোরের ভিআইটি থেকে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনার পর সৌমিত ভ্লগারের পেশা বেছে নেন। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে ট্রাভেল ভ্লগ তৈরি করতেই পছন্দ করেন তিনি। সেইসূত্রে প্রায়শয়ই বাইরে থাকেন। গত বছরের ডিসেম্বরে এক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার হয়ে শুটিংয়ের জন্য কাশ্মীরে আমন্ত্রিত ছিলেন সৌমিত। শ্রীনগর, পহেলগাঁও-সহ একাধিক বিখ্যাত জায়গায় ঘোরে। এই টুরে তাঁর সঙ্গী ছিলেন হরিয়ানার জনপ্রিয় ইউটিউবার জ্যোতি, পুরীর ইনফ্লুয়েন্সার প্রিয়াঙ্কা সেনাপতিরা। তাঁরাও সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন। জ্যোতি, প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে বদগামের দুধপাথরির মতো স্বর্গোদ্যানে ঘুরতে যান সৌমিত। সেটুকু পথই একসঙ্গে ঘুরছিলেন তাঁরা।
এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শেওড়াফুলিতে বিয়েবাড়ির আমন্ত্রণ পেয়ে এসেছিলেন জ্যোতি। সেসময় ঘটনাচক্রে সৌমিতের সঙ্গে দেখা করেন। দু’জনে একসঙ্গে নামী রেস্তরাঁয় গিয়ে বিরিয়ানি খান। সেই মেয়েটিই যে তলে তলে পাকিস্তানের গুপ্তচরবৃত্তি করছেন, ঘুণাক্ষরেও টের পাননি সৌমিত। এই ঘটনার পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সুদূর আন্দামান থেকে সৌমিত জানাচ্ছেন, ”খুব শকিং বিষয়টা! আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না। বিভিন্ন ইভেন্টে আমরা সবাই একসঙ্গে আমন্ত্রিত থাকি। দেখাও হয়। তবে এমন একটা গুরুতর কাজে জ্যোতি লিপ্ত, তা ভাবতেও পারছি না!” তবে কি তিনিও আতঙ্কিত? গোয়েন্দাদের নজরে পড়তে পারেন বলে? এই প্রশ্ন শুনে সৌমিতের দৃপ্ত জবাব, ”আমার ভয় কীসের? আমি তো কখনও পাকিস্তানে যাইনি। গুপ্তচরবৃত্তিও করিনি। যদি আমার বিরুদ্ধেও এসব অভিযোগ থাকত, পুলিশ তো গ্রেপ্তার করত। কিন্তু কেউ আমাকে কিছুই বলেনি, জিজ্ঞাসাও করেনি।”