সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: শাসকদল তৃণমূলের সাধারণ কর্মীরাই এবার দলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে তাঁর থেকে হিসাব চেয়ে বসলেন। আড়শার ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিদ্যাধর মাহাতোকে কাঠগড়ায় তুলে এভাবেই সরব হয়েছেন দলের নিচুস্তরের কর্মীরা। একটি ব্যানারে সভাপতির থেকে বেনিয়মের সব হিসাব চাওয়া হয়েছে। যা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল। যদিও ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’ এর সত্যতা যাচাই করেনি। তবে হোয়াটসঅ্যাপের ওই লম্বা-চওড়া মেসেজে আড়শার ব্লক সভাপতি উল্লেখ থাকলেও তাঁর কোনও নাম নেই। তবে নিশানা যে সম্পূর্ণভাবে ওই ব্লক সভাপতিকে বিদ্যাধর মাহাতোকেই করা হয়েছে। তেমনই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আড়শা ব্লক তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ‘বেনিয়মের’ বিরুদ্ধে সরব হতেই ওই ব্লকের বিভিন্ন অঞ্চলের সাধারণ কর্মীরা মিলে ‘আড়শা ব্লক তৃণমূলের উন্নয়নের সৈনিক’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেন। যা ভাবিয়ে তুলেছে ব্লক তৃণমূল থেকে জেলাকে। তবে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের নতুন সভাপতি তথা বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেন বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব। সেই মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে।’’ পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের নতুন সভাপতি ও চেয়ারপার্সন ঘোষণা হওয়ার পরেই ওই ব্লক তৃণমূল সভাপতিকে নিয়ে এমন বেনিয়মের অভিযোগ সাধারণ কর্মীরাই সামনে আনায় আড়শা ব্লক তৃণমূল ভীষণই অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই মেসেজে রয়েছে, ‘‘আড়শা ব্লক অধীনস্থ যে আটটি অঞ্চল আছে। সেই আটটি অঞ্চলের কর্মীদের অভিযোগ, আড়শা ব্লক মারফত এলাকার উন্নয়নের জন্য মোট ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ের কমিশন আপনি যা নিয়েছেন, তার হিসাব ও ৫৭টি চাকরির কী হল, কাকে দিয়েছেন এবং কীভাবে দিয়েছেন তার সঠিক তথ্য আমাদের জানাতে হবে।’’
২০২৩-এ পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর বোর্ড গঠনের পর থেকে আড়শা পঞ্চায়েত সমিতিতে ওই পরিমাণ টাকার কাজ হয় বলে আড়শা ব্লকের দলের সাধারণ নেতা-কর্মীদের অভিযোগ। এভাবে সাধারণ কর্মীরা শাসকদলের কোনও নেতার বেনিয়মের অভিযোগ তুলে হিসাব চেয়েছেন। তবে ওই ভাইরাল হওয়া মেসেজের প্রেক্ষিতে আড়শার বিভিন্ন অঞ্চলের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, ব্লক সভাপতি বিদ্যাধর মাহাতো দলে কারও সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই দল পরিচালনা করছেন। আড়শা ব্লক তৃণমূলে মোট ৪৩ জনের কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিতে সহ-সভাপতি, সম্পাদক, সহ-সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ আছে। অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গেও ব্লক সভাপতি কোনও আলোচনা করেন না।
ওই ‘আড়শা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়নের সৈনিকে’র অভিযোগ, সমিতিতে যেসব উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে তার কমিশন পান ওই ব্লক সভাপতি। পঞ্চায়েত সমিতি থেকে গ্রামীণ এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য যে ৫৭ জনকে নেওয়া হয়েছে এই বিষয়ে সঠিক তথ্য দাবি করা হয়েছে। ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়নের সৈনিকের তরফে জানানো হয়েছে, ৫৭ জনের মধ্যে ১৬ থেকে ১৭ জন দলের। বাকিরা কারা? তার জবাব দাবি করেছে ‘আড়শা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উন্নয়নের সৈনিক’।