গোবিন্দ রায়: একটানা ১৩ দিন ধরে বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। তার ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন। এই মর্মে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন বিকাশ ভবন চত্বরের এক বাসিন্দা। দ্রুত শুনানির অর্জি জানান তিনি। মামলা দায়ের করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ করল হাই কোর্ট।
সোমবার হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন। মামলাকারীর দাবি, প্রতিদিন নতুন নতুন ঘটনা ঘটছে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কারণে সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়ছে। সে কারণে দ্রুত শুনানির আর্জি জানান মামলাকারী। তবে বিচারপতি দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ করে দেন। তাঁর পর্যবেক্ষণ, “কলকাতা হাই কোর্টে ৭০০ জনস্বার্থ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। যার মধ্যে ৮০ শতাংশের সঙ্গে কোনও জনস্বার্থ জড়িত নেই। বহু মামলাই প্রচারকেন্দ্রিক মামলা।”
প্রসঙ্গত, নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এক কলমের আঁচড়ে চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। হাজারও টানাপোড়েনের পর আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারবেন। বেতনও পাবেন। তবে অশিক্ষক কর্মীরা আপাতত চাকরিহারা। আবারও নতুন করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এসএসসিকে। তবে আর পরীক্ষা দিতে নারাজ ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা। বিকাশ ভবনে টানা অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দফায় দফায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। ওইদিন সন্ধ্যায় বিকাশ ভবনে থাকা একাধিক দপ্তরের সরকারি কর্মীদের ঘেরা করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। সরকারি কর্মীদের মধ্যে কেউ অন্তঃসত্ত্বা তো কারও বাড়িতে রয়েছেন অসুস্থ মা। বাড়ি ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন সরকারি কর্মীরা। বাধ্য দিয়ে পুলিশ তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা করে। সেই সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জও করে। এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর চাপানউতোর।