• স্থলসীমান্তে বন্ধ আমদানি, ভাঁড়ার শূন্য হলেও কেন খুশি ভারতের ব্যবসায়ীরা?
    এই সময় | ২০ মে ২০২৫
  • মালদার মহদিপুর সীমান্ত বন্দর কার্যত খাঁ খাঁ করছে। এই পথেই প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে ৭-৮টি ট্রাক ঢুকত। এখন সব বন্ধ। কিছু ট্রাক অবশ্য রয়েছে। সেগুলোতে কড়া তল্লাশি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তবে নতুন ট্রাক ঢোকা প্রায় বন্ধ।

    বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে বেশ কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যে মূলত রেডিমেড গার্মেন্টসই রয়েছে। তার পর সোমবার মহদিপুর সীমান্ত বন্দর এলাকায় দেখা গেল এই দৃশ্য।

    দেশের স্বার্থে নিজেদের ক্ষতি স্বীকার করে নিতে রাজি ভারতের আমদানিকারকরা৷ যদিও তাঁরা এবং বাংলাদেশের রফতানিকারকরা চাইছেন, দুই দেশের সম্পর্ক দ্রুত ঠিক হোক৷ কারণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর দুই দেশের অনেক পরিবার নির্ভরশীল৷

    মালদা মুজিবুর এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য তথা রপ্তানি ব্যবসায়ী ভূপতি মণ্ডল বলছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে মূলত রেডিমেড গার্মেন্টস আর চটের ট্রাকই আসে। আগে ৭-৮টা ট্রাক ঢুকত। কখনও কখনও ১২-১৪টাও। প্রতি ট্রাক পিছু ব্যবসা হতো প্রায় ২ লাখ টাকার। তার মানে এখন প্রায় ১৫-১৬ লাখ টাকার লোকসান হচ্ছে।’

    যাত্রী পারাপারও হতো এই সীমান্ত দিয়ে। তা-ও কমেছে। ব্যবাসায়ীরা কেন্দ্রের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, যদি ক্ষতি কিছু হয় আমরা সহ্য করে নেব, দেশ সবার আগে। ডিজিএফটি বা ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড’-এর তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বাংলাদেশে তৈরি সব রকমের ‘রেডিমেড গার্মেন্টস’ এ বার থেকে শুধু নৌবন্দর দিয়েই ভারতে প্রবেশ করবে।

    বাংলাদেশের রেডিমেড গার্মেন্টসের আমদানি বন্ধ হলেও ভারতীয় ব্যবসায়ীদের খুব একটা ক্ষতি হবে না বলেই মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরাl স্থল বন্দরের কাস্টমস আধিকারিক রতন কুমার রাই জানান, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ থেকে কোনও আমদানি হচ্ছে না। মেডিক্যাল ভিসা ছাড়া সাধারণত কেউ ভিসাও পাচ্ছে না। রপ্তানিও কম হচ্ছে।

    অন্য দিকে, পেট্রাপোল আন্তর্জাতিক ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে খুশি। তিনি বলছেন, ‘বাংলাদেশকে একটা বার্তা দেওয়া হলো। আমরা যেন বাংলাদেশের কাছে ভিলেন হয়ে গিয়েছিলাম। যখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, আমাদের রাষ্ট্রনেতারা সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু আজ ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে যে প্রচার হচ্ছে, ব্যবসাতেও তার প্রভাব পড়ছে।’

    উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারতে সারা দিনে যত গাড়ি ঢোকে তার প্রায় ২৫ শতাংশ গাড়ি পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে আসে। এর মধ্যে যেমন রেডিমেড গার্মেন্টস রয়েছে, তেমনই রয়েছে প্যাকেটজাত খাদ্যসামগ্রী, প্লাস্টিকের সামগ্রী।

    এরই পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তে বিপাকে বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ীই। যেমন মোহাম্মদ রফিক। তিনি স্বীকার করে নিলেন, বর্তমানে দু’দেশের সম্পর্ক ভালো নেই। তাঁর কথায়, ‘আমরা ভারতে আসার ভিসা পাচ্ছি না। বিশেষ কারণ দেখালে তবেই মিলছে। তার মধ্যে আবার রেডিমেড গার্মেন্টস বাংলাদেশ থেকে ভারতে আমদানিও বন্ধ হয়ে গেলl এতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদেরই ক্ষতি হবে। শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ছাড়ার পরে সমস্যা শুরু হয়েছে। আমরা চাই সম্পর্ক আবারও ভালো হোক।’

  • Link to this news (এই সময়)