অর্ণব দাস, বারাকপুর: টিটাগড়ে বিস্ফোরণে গ্রেপ্তার কাউন্সিলর-সহ আরও দুই। টিটাগড় পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁশবাগান এলাকার ফ্ল্যাটে ছাদের ঘরের শৌচাগারে মজুত বিস্ফোরকের থেকেই হয়েছে বলে অভিযোগ। বিল্ডিংয়ের প্রোমোটার স্থানীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ফ্ল্যাটটি জবরদখল করে রাখার অভিযোগ তোলায় চাঞ্চল্য আরও বেড়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ কাউন্সিলর আরমান মণ্ডল ওরফে মহম্মদ রিয়াজউদ্দিন-সহ আরশাদ খান ও মহম্মদ শারুককে গ্রেপ্তার করেছে। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দ্রবদন ঝাঁ জানিয়েছেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। কী থেকে বিস্ফোরণ তা স্পষ্ট নয়। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ আসলেই কারণ জানা যাবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তখন ঘুমে আচ্ছন্ন পাড়ার প্রায় সকলে। আচমকা বিকট শব্দে এলাকা কেঁপে উঠলে ঘুম ভেঙে যায় বাসিন্দাদের। তড়িঘড়ি সকলে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে দেখেন, বারুদের গন্ধ আর ধোঁয়ায় চারদিক ভরে গিয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় অকুস্থলের দশ ফুট বাই আট ফুটের দেওয়াল জানলা সহ ভেঙে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাশের ঝুপড়ির কয়েকটি টালির চালের বাড়িও। বিস্ফোরণের অভিঘাতে বহুতলের একাধিক দেওয়ালেও ফাটল ধরেছে। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি টিটাগড় থানার পুলিশ সেখানে পৌঁছে ঘটনাস্থলের চারপাশ কর্ডন করে দেয়।
বহুতলের প্রোমোটার দাবি করেন, “৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরমান মণ্ডল ভোটের সময় সাত দিনের জন্য ফ্ল্যাটটি নিয়েছিল। তারপর থেকেই ওঁ দখল করে রেখেছেন। চাবি চাইলে দিত না।” তার এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক চাঞ্চল্য তীব্র হয়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে সকালে তৃণমূল কাউন্সিলর আরমান জানিয়েছিলেন, “যে কেউ, যাঁর বিরুদ্ধে আঙুল তুলতে পারে। আমি ওই ঘর নিয়ে কী করব? পুলিশ তদন্ত করলেই সত্যিটা সামনে আসবে। আমি চাই এই ষড়যন্ত্রের পিছনে যে রয়েছে তাকে খুঁজে বার করা হোক।” সরব হয়ে বিজেপি নেতা অর্জুন সিং জানায়, “শুধু বিস্ফোরণ বলে ঘটনাটিকে ছোট করলে হবে না। পাশেই ক্যান্টনমেন্ট এলাকা। সবটাকে এক জায়গায় নিয়ে এলে ঘটনার গুরুত্ব বোঝা যাবে। তাই পুলিশ তদন্ত করলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করবে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএকে দিয়ে এর তদন্ত করা উচিত।” শেষে সন্ধ্যায় পুলিশ কাউন্সিলর সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করলে এনিয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর স্পষ্ট বলেন, “পুলিশ তদন্ত করে যাদের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার সন্দেহ করেছে, তাদের গ্রেপ্তার করেছে। সে কাউন্সিলর হোক বা অন্য কেউ। পুলিশ তার কাজ করেছে। যেই অন্যায় করুক তার শাস্তি পেতে হবে।”