সুপ্রিম রায় অমান্য করে পরীক্ষা না দিয়েই স্কুলে ফিরতে চান চাকরিহারারা! আন্দোলন নিয়ে কী বলছেন ব্রাত্য?
প্রতিদিন | ২০ মে ২০২৫
অর্ণব দাস, বারাকপুর: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানতে চান না চাকরিহারা আন্দোলনকারীরা! পরীক্ষা না দিয়ে স্কুলে ফিরতে চান! কিন্তু শীর্ষ আদালতের নির্দেশ কোনওভাবেই অমান্য করা সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য় বসু।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারা প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী। চাকরি ফেরাতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভের নামে বিকাশ ভবন চত্বরে কার্যত তাণ্ডব করেন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। গত বৃহস্পতিবারের ঘটনায় বিকাশ ভবনে আটকে পড়েন কয়েকশো সরকারি কর্মী। তাঁদের মধ্যে কেউ অন্তঃসত্ত্বা, আবার কারও বাড়িতে অসুস্থ বৃদ্ধা মা। তাই অফিস ছুটির পর বাড়ি ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন সরকারি কর্মীরা। পুলিশ তাদের উদ্ধার করতে গেলে বিকাশ ভবন চত্বরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এখনও বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। চাকরিহারাদের অভিযোগ, তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাজ্য সরকারা চিন্তিত নয়। মুখ্যমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি। কোনও যোগাযোগ করছেন না। এই অভিযোগ নিয়ে সোমবার মুখ খুললেন শিক্ষামন্ত্রী।
টিটাগড়ের জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “দপ্তরের সচিবালয় থেকে বারবার আন্দোলনকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু লিখিতভাবে কিছুই জানায়নি। তখন যুদ্ধ চলছে। তাই তখন হয়তো কেউ খেয়াল করেনি।” তিনি আরও জানান, “মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, আন্দোলনকারীরা পরীক্ষা দিতে চান না। সসম্মানে স্কুলে ফিরতে চান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট যেটা বলেছেন তা আমরা কীভাবে অবজ্ঞা করতে পারি।” আন্দোলনকারীদের মধ্যেও বিভেদ রয়েছে বলে দাবি করেন ব্রাত্য। বলেন, “যাঁরা বলছেন পরীক্ষা দিতে চান না, তারাই কি একমাত্র? আমার কাছে আড়াই থেকে তিন হাজার শিক্ষকের চিঠি আছে। যারা সরকারকে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করতে রাজি আছেন, বলেছেন। সরকার যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তাতে সহমত পোষণ করেছেন।”
বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলনকারীরা অচলাবস্থা তৈরি করতে চাইছেন বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, “যাঁরা আন্দোলনে বসে আছেন তাঁরা অচলাবস্থার চেষ্টা করছেন। এটা কাঙ্খিত নয়। তবুও আমি তাঁদের সদিচ্ছার উপর আস্থা রাখব। আদালতকে অবজ্ঞা করা তাঁদের ভবিষ্যতের পক্ষেও ভালো হবে না।” চাকরিহারাদের উদ্দেশে ব্রাত্যর বার্তা, “আন্দোলনকারীদের বার্তা দেব, স্কুলে যান। আমরা যে আইনি লড়াই লড়ছি, সেটার জন্য অপেক্ষা করুন। ভরসা রাখুন। সরকার সবাইকে চাকরি দিয়েছিল। কাউকে যোগ্য বা অযোগ্য বলেনি। আমরা রিভিউ পিটিশন দাখিল করছি। সুপ্রিম কোর্ট যে আদেশ দিয়েছে, তা সুষ্ঠুভাবে পালন করার জন্য আমাদের মত আপনারাও দায়িত্ববান হোন।”
উল্লেখ্য, এদিন আন্দোলনের লক্ষ্মণরেখা থাকা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আন্দোলন থেকে সরে এসে আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন। এবার একই সুর শোনা গেল শিক্ষামন্ত্রীর গলাতেও। তাতে কি বরফ গলবে? উত্তর কালের গর্ভে।