• রাস্তার আলো নিভিয়ে তৃণমূল কর্মীকে খুন!
    বর্তমান | ২০ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: রাজনৈতিক কারণে বিবাদ ছিল। বদলা নিতে সুযোগ খুঁজছিল বিরোধীরা। রবিবার রাতে অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে বেরতেই তাড়া করে কয়েকজন। কিছুটা দৌড় করানোর পর নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হল এক তৃণমূল কর্মীকে। ইংলিশবাজারে এই ঘটনার পর মৃত সুবল ঘোষের পরিবারের দাবি, প্রমাণ ও পরিচয় লুকনোর জন্য অপরাধীরা রাস্তার আলো নিভিয়ে দেওয়ার পর খুন করেছে।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে,ইংলিশবাজার থানার মহদিপুরের বারোদুয়ারি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন সুবল। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণে পুরনো বিবাদের জেরেই এভাবে হত্যা করা হয়েছে। মালদহের পুলিস সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, পুরনো বিবাদকে কেন্দ্র করেই এই খুন। এফআইআর হয়েছে। তদন্ত চলছে। 

    পুলিসের এক আধিকারিকের কথায়, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে বাপি ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল সুবলের বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই ব্যক্তি মালদহের একটি নার্সিংহোমে টানা একমাস চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেই সময় পুলিস সুবলকে গ্রেপ্তারও করেছিল। পরে তিনি জামিন পেয়ে যান। 

    রবিবার রাতে কী ঘটেছিল? সুবলের ছেলে সুজন ঘোষের কথায়, বাবা একটা বাড়িতে খেতে গিয়েছিলেন। রাস্তায় ওরা প্রায় সাতজন মিলে ঘিরে ধরার পর ধাওয়া করে বাবাকে। রাস্তার আলো নিভিয়ে ওরা একাধিকবার কোপ মারে এবং শ্বাসনালী কেটে দেয়। 

    পরিবারের সদস্যরা হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সুবলকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। পুলিস সূত্রে খবর, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের পরিবারের এক মহিলাকে আটক করা হয়েছে, বাকিরা পলাতক।  

    মৃতের পরিবারের দাবি, সুবল এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী ছিলেন। যাঁরা তাঁকে কুপিয়ে খুন করেছেন, সবাই বিজেপির কর্মী। 

    সোমবার দুপুরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। সেই সময় বাইরে অপেক্ষারত সুবলের শ্যালক শুভঙ্কর ঘোষ বলেন, জামাইবাবু তৃণমূল কংগ্রেস করতেন। হামলাকারীরা বিজেপি করে। অনেকদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। পরিকল্পনা করেই জামাইবাবুকে খুন করা হয়েছে। 

    তৃণমূলের মালদহ জেলা কমিটির মুখপাত্র আশিষ কুণ্ডু  বলেন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলা জুড়ে বিজেপি অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে। এই খুনের সঙ্গে জড়িতরা অবিলম্বে কঠোর শাস্তি পাক, এটাই আমাদের দাবি। 

    যদিও বিজেপির দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় দলের কর্মীদের খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, এটি একটি পারিবারিক বিবাদ। এর সঙ্গে বিজেপি কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুক পুলিস।  সুবল ঘোষ।
  • Link to this news (বর্তমান)