• ডেটা সেন্টার, চারটি শিল্পতালুকের উদ্বোধন ৫৪০০ জনের কর্মসংস্থানের ঘোষণা
    বর্তমান | ২০ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ডেটা সেন্টার থেকে চারটি শিল্পতালুক। প্রায় ১৮০ কোটি টাকার প্রকল্প উপহার। এতে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মানুষের। দীর্ঘ ছ’বছর পর শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলি উপহার দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চা শ্রমিকদের পাশে থাকার, মাখনার কৃষিশুল্ক প্রত্যাহার করার আশ্বাস দিয়েছেন। একইসঙ্গে সম্মেলন থেকে উত্তরবঙ্গে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব পেশ হয়েছে। সেই তালিকায় হোটেল থেকে শিল্পতালুক, ইথানাল থেকে ভুট্টা প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট, ডেয়ারি শিল্প রয়েছে। 

    ২০১৮ সালে শৈলশহরে বিজনেস সামিটে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছ’বছর পর এদিন তিনি শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে এলেন। দীনবন্ধু মঞ্চে ওই সম্মেলনের আয়োজন করে এমএসএমই দপ্তর। মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। যারমধ্যে মাটিগাড়ায় ওয়বেলের ডেটা সেন্টার অন্যতম। প্রশাসন সূত্রে খবর, এটি বানাতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ৩০০ থেকে ৪০০ যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হবে। এরবাইরে জলপাইগুড়ি জেলার আমবাড়ি ও ফালাকাটায় দু’টি এবং আলিপুরদুয়ার জেলার এলেনবাড়ি ও জয়গাঁয় দু’টি মোট চারটি শিল্পতালুক তৈরি হয়েছে। এগুলি তৈরিতে জমি লেগেছে প্রায় ১২৩.২৮ একর। খরচ হয়েছে ৮০ কোটি টাকা। তাতে কর্মসংস্থান হবে প্রায় পাঁচ হাজার লোকের। 

    প্রকল্পগুলির উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছোট ছোট শিল্পের মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে হবে। ছোট দোকান বানানোর কথা বলায় বিরোধীরা কটূ কথা বলেন। কিন্তু আমি জীবনের চলার পথে দেখেছি, ছোট ব্যবসা করেই অনেকে বড় হয়েছেন। চপ ও বেগুনির দোকান করে অনেকে বড় হয়েছেন। তাই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মাধ্যমেই আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। 

    পাশাপাশি চা শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষা করার বার্তা দেন মমতা। বলেন, চা বাগানের শ্রমিকদের বিপদে ফেলব না। ওঁদের সুরক্ষা দেব। বাগানের খালি জমিতে হোটেল হলে কাদের কর্মসংস্থান হবে? শ্রমিকদের। কিন্তু কেউ কেউ কিছু করবে না। রাস্তায় বসে যাবে। উন্নয়নমূলক কাজে বাগরা দেওয়ার চেষ্টা করবে। এটা মানা যায় না। 

    উত্তরবঙ্গ বিজনেস মিট-২০২৫’এ হাজির ছিলেন কোচবিহার থেকে মালদহ পর্যন্ত আট জেলার প্রায় পাঁচ হাজারজন। যারমধ্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা থেকে ব্যবসায়ী ও উদ্যোগপতিরা ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও মঞ্চে ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ, শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেন, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ, দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল প্রমুখ। মঞ্চ থেকে ক্রেডাইয়ের পক্ষে নরেশ আগরওয়াল বলেন, শিলিগুড়ি সহ গোটা উত্তরবঙ্গে প্রায় ন’হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। তাতে শিলিগুড়িতে ১৫শো কোটি টাকায় ১৫টি হোটেল, মালদহে ইথানল কারখানা, মাখনা প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, পাঁচটা শিল্পতালুক, আবাসন শিল্প প্রভৃতি রয়েছে। মাটিগাড়ায় সরকারি উদ্যোগে ৪০ কোটি টাকায় এবং কোচবিহারে বেসরকারি উদ্যোগে ডেয়ারি শিল্পও গড়ে উঠছে। 

    এমন প্রেক্ষাপটে মাখনা থেকে কৃষিশুল্ক প্রত্যাহার করার দাবি তোলেন মালদহের ব্যবসায়ীরা। মমতা বলেন, শীঘ্রই মাখনা থেকে কৃষিশুল্ক প্রত্যাহার করা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় পিপিপি মডেলে শপিংমল করা হবে। তাতে স্বনির্ভরগোষ্ঠীর মহিলাদের জন্য দু’টি তলা চিহ্নিত থাকবে। সেখানে তাঁরা ব্যবসা করবেন। কোচবিহারে অনেক কিছু হয়েছে। এবার সেখানে শিল্প স্থাপনে জোর দিতে হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)