• হোমের চার মূক ও বধির যুবতীকে স্বনির্ভরতার পাঠ রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার নিয়তি সরকারের
    বর্তমান | ২০ মে ২০২৫
  • সুমন রায়, রায়গঞ্জ: নিজের হোটেলে কাজের সুযোগ করে দিয়ে মূক ও বধির যুবতীদের স্বনির্ভর করে তুলছেন নিয়তি সরকার। রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় প্রশাসনিক দপ্তর সংলগ্ন এলাকায় নিজের হোটেল চার যুবতীকে স্বনির্ভরতার পাঠ দিচ্ছেন তিনি। কর্ণজোড়ায় সূর্যোদয় হোমে এই যুবতীদের কৈশোর কাটলেও এখন তাঁরা সাবালিকা। নিয়ম অনুসারে হোমও আর তাঁদের রাখতে পারবে না। হোম থেকে মুক্ত হলেই জীবন যুদ্ধে নেমে পড়তে হবে তাঁদের। কিন্তু মূক ও বধির চার তরুণীর জীবন চলবে কীভাবে? তাঁদের জীবন যুদ্ধ নিয়ে চিন্তিত নিয়তিদেবী এগিয়ে এসেছেন। নিজের হোটেলে এই চার যুবতীকে শেখাচ্ছেন রান্না ও ব্যবসা। যাতে আগামী দিনে তাঁরা নিজেরাই জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন।

    নিয়তিদেবী বলেন, দু’মাস ধরে আমার দোকানে তাদের রেখেছি। তাদের কাজ শেখাচ্ছি। চারজনই এখন আমার মেয়ে হয়ে গিয়েছে। প্রথম প্রথম তাদের ভাষা, অনুভূতি বুঝতে সমস্যা হতো। কিন্তু এখন মেয়েদের ভাষা বুঝতে অসুবিধা হয় না। আমার ইচ্ছে, তাদের একটা হোটেল করে দেব। যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের জীবন জীবিকা চালাতে পারে।

    কর্ণজোড়ায় প্রশাসনিক দপ্তর হওয়ায় মাঝেমধ্যে প্রশাসনের কর্তারা এসে খোঁজ নিয়ে যাচ্ছেন। এমনকী হোমের দায়িত্বে থাকা কর্তারাও এসে যুবতীদের সঙ্গে কথা বলছেন। যুবতীরা ইশারায় গ্রাহকদের সঙ্গে ভাব প্রকাশ করছেন। 

    প্রশাসনিক দপ্তরে কাজ করা অপূর্বকুমার সেন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই হোটেলে খাবার খাই। যেদিন থেকে এই মেয়েরা হোটেলে এসেছে সেদিন থেকে সেদিন থেকে তাদের প্রতি মায়া বেড়ে গিয়েছে। তাদের ইশারা বুঝতে অসুবিধা হয়? অপূর্ব বলেন, ওদের ইশারা বোঝার চেষ্টা করি। এখন অনেকটা বুঝতে পারি।

    রায়গঞ্জের মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতি বলেন, ১৮ বছর হলে মেয়েদের হোম থেকে ছেড়ে দিতে হয়। মূক ও বধির এই মেয়েদের অন্ন সংস্থান নিয়ে আমরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। নিয়তিদেবী এগিয়ে এসেছেন। সম্পূর্ণ সুরক্ষার মাধ্যমে তাদের হোটেলে রাখা হয়েছে। আগামী দিনে এভাবেই তারা স্বনির্ভর ও হোক এটাই চাই।  রান্না শেখাচ্ছেন নিয়তি সরকার। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)