• সিউড়িতে বাসের ছাদে কয়লা পাচারের চেষ্টা, চালক ও কন্ডাক্টর পুলিসের জালে
    বর্তমান | ২০ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: পুলিস ও এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের চোখে ধুলো দিতে কয়লা পাচারে ব্যবহার করা হচ্ছে বেসরকারি বাস! এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের অভিযানে সেই তথ্যই এবার সামনে এল। সোমবার সকালে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের তরফে চন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। যাত্রীবোঝাই বেসরকারি বাসের ছাদ থেকে একাধিক বস্তাবোঝাই বিপুল পরিমাণ কয়লা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনায় বাসের চালক ও কন্ডাক্টরকে গ্রেপ্তার করে চন্দ্রপুর থানার পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে ধৃতরা, মোজাহার খান ও বুদ্ধদেব দাস। আজ, মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সাফল্য মিলেছে। এই ঘটনায় কে বা কারা জড়িত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

    বালি সহ কয়লা পাচার রুখতে বীরভূম জেলা পুলিস কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জেলাজুড়ে নাকা তল্লাশিতে জোর দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতেও একাধিক অভিযানও চলছে। আসরে নেমেছে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চও। এই পরিস্থিতিতে পাচারকারীরা পুলিস ও এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের কর্তাদের চোখে ধুলো দিতে প্রথমে বড় গাড়ির বদলে গোরু ও মোষের গাড়ি বেছে নিয়েছিল। যদিও তাতেও পুলিস এবং এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের নজর পড়তেই এবার পাচারকারীরা যাত্রীবাহী বাসের দিকে নজর দিতে শুরু করেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের তরফে জানা গিয়েছে, ওই বেসরকারি বাসটি যাত্রী নিয়ে রাজনগর থেকে সিউড়ির দিকে রওনা হয়েছিল। গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে বাসটি দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। সেসময় বাসের ছাদ থেকে প্রায় ৩০টি বস্তাবোঝাই কয়লার হদিশ মেলে। প্রতিটি বস্তায় ৪০ কেজি করে কয়লা ছিল। যদিও চালক ও কন্ডাক্টর ওই বোঝাই কয়লা সংক্রান্ত কোনও বৈধ নথি দেখাতে পারেনি। ঘটনায় বাসের চালক ও কন্ডাক্টর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে যাত্রীদের বাস থেকে নামিয়ে কয়লা সহ বাসটিকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। 

    সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, ধৃত কন্ডাক্টর রাজনগর এলাকার কংগ্রেস নেতা হিসেবে পরিচিত। যদিও এনিয়ে জেলা কংগ্রেস নেতারা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

    এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের তরফে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ওই বিপুল পরিমাণ কয়লা চোরাই পথে ঝাড়খণ্ড থেকে নিয়ে এসে সিউড়িতে বিক্রির পরিকল্পনা ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের কর্তারা জানতে পেরেছেন, রাজনগরের এক প্রভাবশালী ব্যক্তির তত্ত্বাবধানেই ওই কয়লা বাসের ছাদে করে সিউড়ি নিয়ে যাওয়া হতো। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার বাসের ছাদে করে কয়লা পাচারের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। 

     বাস থেকে উদ্ধার হওয়া কয়লা।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)