• দেহরক্ষীকে গুলি, ধৃত তৃণমূল নেতা সাজিজুল, ওয়ান শটার, নাইন এম এম, সেভেন এম এম পিস্তল উদ্ধার
    বর্তমান | ২০ মে ২০২৫
  • সংবাদদাতা, তেহট্ট: নিজের সরকারি দেহরক্ষীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন থানারপাড়ার তৃণমূল নেতা সাজিজুল হক শাহ ওরফে মিঠু। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে। অভিযোগ, রাতে তাঁকে ঘুমোতে যেতে বলায় তাঁর দেহরক্ষী হিসেবে কর্তব্যরত পুলিস কনস্টেবলকে লক্ষ্য করে গুলি চালান মিঠু। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় বেঁচে যান কনস্টেবল জাহাঙ্গির আলম। অভিযোগ পেয়ে ভোররাতে অভিযান চালিয়ে তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে একটি একনলা পিস্তল, একটি সেভেন ও একটি নাইন এমএম পিস্তল, ৮ রাউন্ড কার্তুজ ও  একটি গুলির খোল উদ্ধার করেছে পুলিস। গ্রেপ্তার করা হয় তৃণমূল নেতাকে। খুনের চেষ্টা ও অস্ত্র আইন সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে তেহট্ট মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিস। বিচারক অভিযুক্তকে পাঁচ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। 

    স্থানীয় ও পুলিস সুত্রে জানা গিয়েছে, এক সময়ে মাওবাদী সন্দেহে মিঠুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ফিরে এসে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী হয়ে করিমপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি হন। গোয়েন্দাদের কাছে রিপোর্ট ছিল, যে কোনও সময়ে মিঠুর প্রাণ সংশয় হতে পারে। সেই কারণে তাঁকে একজন সশস্ত্র দেহরক্ষী দেওয়া হয়েছিল। তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার ছায়াসঙ্গী ছিলেন মিঠু। রবিবার বিধায়কের স্মরণসভা শেষ করে বাড়িতেই অস্বাভাবিক পরিমাণে মদ্যপান করেন। অভিযোগ, রাতে শুতে যেতে বলতেই রেগে যান তৃণমূল নেতা। অভিযোগ, এই সময় নিরাপত্তা রক্ষীর সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করে দেন তিনি। নিরাপত্তা রক্ষী নীচে চলে আসেন। জাহাঙ্গির আলম বলেন, পৌনে পাঁচটা নাগাদ ওঁর স্ত্রী আমাকে বলেন যে, আপনি বেরিয়ে যান। ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে নীচে নামছে গুলি করে দিতে পারে। এই কথা শুনে আমি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাই। ঠিক তখনই উনি গুলি চালান। যদিও গুলিটি আমার লাগেনি। বাড়ির বাইরে এসে আমি থানার পাড়ার ওসিকে ফোন করি। তাঁরা এসে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। এই খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিরাট পুলিস বাহিনী। ঘিরে ফেলা হয় তৃণমূল নেতার বাড়ি। তল্লাশি চালানো হয় তৃণমূল নেতার বাড়িতে। প্রথমে আটক করা হয় তৃণমূল নেতাকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে মিঠু বলেন, আমাকে পুলিস চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছে। আমি গুলি চালাইনি।  নারায়ণপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা মিঠু শাহের স্ত্রী মানোয়ারা শাহ বিবি বলেন, আমাদের বাড়িতে গুলি চালানোর কোনও ঘটনা ঘটেনি। আমি নিরাপত্তা রক্ষীকে কিছুই বলিনি। তাপস সাহা মারা যাওয়ার পর ওকে কেউ ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। রাতে কোনও রকম নেশা করেনি ও। মহকুমা পুলিস আধিকারিক শুভতোষ সরকার বলন, নিরাপত্তা রক্ষীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পাঁচ  দিনের পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। অস্ত্র আইন সহ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা শুরু হয়েছে।  ধৃত তৃণমূল নেতা সাজিজুল (উপরে)। বাজেয়াপ্ত হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র (নীচে)।
  • Link to this news (বর্তমান)