সংবাদদাতা, কান্দি: নাবালিকা শিশু কন্যার সামনেই মাকে ঝুলিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। সোমবার সকালের এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল সালার থানার দক্ষিণখণ্ড গ্রামে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম শর্মিলা দাস (২৪)। তিনি ওই গ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। একই গ্রামে তাঁর বাপের বাড়ি। পুলিস দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত স্বামীকে।
প্রায় আট বছর আগে শর্মিলার সঙ্গে গ্রামেরই যুবক শোভন দাসের বিয়ে হয়। শোভন পেশায় দিনমজুর। বিয়ে পরবর্তী সময়ে তাঁদের দু’টি কন্যা সন্তান হয়েছে। এর মধ্যে বড় মেয়ে রিয়া দাসের বয়স পাঁচ বছর। এদিনের ঘটনা রিয়ার সামনেই ঘটেছে বলে দাবি।
মৃতার বাপের বাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর ধরে স্ত্রীকে মোটেই সহ্য করতে পারত না শোভন। এনিয়ে ধারাবাহিক বিবাদ চলছিল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। মাঝে মধ্যেই স্ত্রীকে মারধর করার অভিযোগ উঠত স্বামীর বিরুদ্ধে। কয়েকবার তাঁদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদের কথাও উঠেছিল।
এরপর সোমবার সকালে ওই বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৃতার বাপের বাড়ির লোকজনের দাবি, অন্যদিনের মতো এদিন সকালে ফের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাড়ির কাজকর্ম না হওয়া নিয়ে বিবাদ শুরু হয়। এরপর শর্মিলাকে মারধর শুরু করা হয় বলে দাবি। এমনকী পাঁচ বছরের নাবালিকা রিয়ার সামনেই স্ত্রীর গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রিয়া জানায়, সকালে মা ও বাবার মধ্যে খুব ঝগড়া চলছিল। বাড়ির উঠানে বাবা মাকে মারতে থাকে। এরপর মাকে টানতে টানতে ঘরে নিয়ে যায় বাবা। মায়ের গলায় গোরুর দড়ি পরিয়ে দিয়েছিল। এরপর ছাদের কাঠে দড়ি লাগিয়ে টানছিল। এরপর আমি ছুটে গিয়ে সবাইকে চেঁচিয়ে বলতে থাকি।
মৃতার মা রেণুকা দাস বলেন, আমার মেয়েকে পছন্দ হচ্ছিল না জামাইয়ের। তাই কয়েক বছর ধরেই ওদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। মেয়েকে ছাড় দেওয়ার কথাও চলছিল। রবিবারও মেয়েকে মারধর করা হয়। আমি মেয়েকে বাড়ি আনতে গেলেও জামাই ছাড়তে চায়নি। এরপর এদিন মেয়েকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে জামাই। আমরা ওর কঠোর শাস্তি চাই।
এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে সালার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে। সালার থানার পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযুক্তের এক আত্মীয় স্বপন দাস বলেন, সাংসারিক অশান্তি লেগে থাকত এটা ঠিক, তবে নিজের স্ত্রীকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটি আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না। শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র