পঞ্চম অর্থ কমিশনের টাকা খরচ নিয়ে মহিষাদলে সেরা নাটশাল-১ পঞ্চায়েত
বর্তমান | ২০ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, হলদিয়া: রাজ্যের পঞ্চম অর্থ কমিশনের টাকা খরচে সময়মতো ১০০ শতাংশ কাজ শেষ করে মহিষাদল ব্লকের সেরা হয়েছে নাটশাল-১ গ্রাম পঞ্চায়েত। জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, মহিষাদলের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজের নিরিখে এই পঞ্চায়েত শীর্ষে রয়েছে। শুধু স্টেট ফিনান্স নয়, কেন্দ্রের দেওয়া পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচেও ব্লকের মধ্যে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এগিয়ে রয়েছে। নতুন ধরনের কাজের পরিকল্পনা এবং রূপায়ণে তৃণমূল পরিচালিত এই গ্রাম পঞ্চায়েত অন্যদের টেক্কা দিচ্ছে।
পরিষেবামূলক পরিকাঠামো তৈরির পাশাপাশি স্থায়ী সম্পদ গড়ে নিজস্ব আয় বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছে নাটশাল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন বোর্ড। ২০২৩-’২৪ অর্থ বর্ষের ২০ লক্ষ টাকা এবার ৩১ মার্চের মধ্যে ১০০ শতাংশ খরচ করে ব্লকের শীর্ষে রয়েছে নাটশাল। গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগাম পরিকল্পনা করে দ্রুত কাজ করার ফলেই পঞ্চম অর্থ কমিশনের টাকা খরচ হয়েছে। ১৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা খরচে পঞ্চায়েত অফিস সংলগ্ন মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি হয়েছে। অফিসে আসা মায়েদের জন্য পঞ্চায়েত অফিসে স্তন্যপান কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। তার জন্য ৪৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। একটি রুমকে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। এছাড়া কংক্রিটের রাস্তা ও কাঠের ব্রিজ তৈরি হয়েছে।
রূপনারায়ণ নদের তীরে নাটশাল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিবেশ খুবই মনোরম। স্থানীয়রা বলেন, ওই এলাকার কাছেই একসময় তাম্রলিপ্ত বন্দর ছিল। ওই পঞ্চায়েতের মৎস্যচক এলাকায় নদীর চর থেকে প্রচুর প্রাগৈতিহাসিক নমুনা মিলেছে। নাটশালের গেঁওখালি বাজার শতাব্দী প্রাচীন বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠার কারণ ব্রিটিশদের খনন করা হিজলি টাইডাল ক্যানেল। ওই ক্যানেল চলে গিয়েছে ওড়িশা পর্যন্ত। ওই ক্যানেলের মাধ্যমে একসময় কলকাতা ও ওড়িশার মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্য চলত। গেঁওখালি বাজার এবং জেটিঘাটের পাশেই নাটশাল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিস। গ্রাম প্রধান শিবপ্রসাদ বেরা বলেন, নাটশাল এলাকা খুবই ঐতিহ্যবাহী। পঞ্চায়েতের নতুন বোর্ড এবার রাস্তাঘাট, পরিষেবার সঙ্গে পর্যটনে জোর দিচ্ছে। এজন্য গেঁওখালি বাজার থেকে ভুঁইয়াসুড়া পর্যন্ত মহিষাদল সড়কে দু’কিলোমিটার রাস্তায় স্ট্রিটলাইট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত। নাটশাল রামকৃষ্ণ মিশন, নাটশাল ও গেঁওখালি হাইস্কুল সহ ছ’টি জায়গায় হাইমাস্ট লাইট বসানো হচ্ছে। রূপনারায়ণের তীরে সেচ বাংলোর কাছে পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয় বাড়াতে যৌথ উদ্যোগে একটি রিসর্ট তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। কেন্দ্রের পঞ্চদশ কর্থ কমিশনের ৩৬ লক্ষ টাকা খরচেও এগিয়ে রয়েছে আমাদের পঞ্চায়েত।