বেআইনি হোর্ডিং নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় ‘স্পেশাল মিটিং’য়ের সিদ্ধান্ত চেয়ারম্যানের
বর্তমান | ২০ মে ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: বেআইনি হোর্ডিংয়ে ছেয়ে গিয়েছে বরানগরে বি টি রোডের দু’পাশ। পূর্তদপ্তরের জায়গায় বড় বড় ইউনিপোল সহ নানা হোর্ডিং লাগানো হলেও তাদের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। পুরসভাও সিংহভাগ হোর্ডিং থেকে কোনও ‘ভিউ ট্যাক্স’ পায় না। সোমবার বিষয়টি নিয়ে পুরসভার সিআইসি মিটিংয়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এই ধরনের সব বেআইনি হোর্ডিং ভেঙে দেওয়ার দাবিতে সরব হন একাধিক কাউন্সিলার। পরে পুরসভার তরফে জানানো হয়, এই সমস্যা নিয়ে একটি ‘স্পেশাল মিটিং’ করা হবে। সেখানে আধিকারিকদের উপস্থিতিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শ্যামবাজার থেকে শুরু হয়েছে বি টি রোড। কলকাতা পুরসভা এলাকার বি টি রোডে কোনও ইউনিপোল হোর্ডিং চোখে পড়ে না। বরং রাস্তার দু’দিকে গাছের সারি দেখা যায়। কিন্তু সিঁথির মোড় পেরলেই বদলে যায় দৃশ্যপট। কলকাতা শহর ছেড়ে রাস্তাটি বরানগর পুরসভা এলাকায় ঢোকা মাত্র দৃষ্টি আটকে যাবে কোনও না কোনও বিজ্ঞাপনী হোর্ডিংয়ে। কয়েক হাত দূরত্বে দাঁড়িয়ে রয়েছে একের পর এক ইউনিপোল। রাস্তার উপরও ঝুলে রয়েছে হরেক হোর্ডিং। রাস্তার দুই লেনের মাঝের ডিভাইডারও ছাড় পায়নি! ছোট ছোট লোহার স্ট্যান্ডে কয়েক হাত অন্তর দেওয়া হয়েছে রাশি রাশি বিজ্ঞাপন। অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালীরা এলাকার কাউন্সিলারদের মদতে কোটি কোটি টাকার এই কারবার চালাচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রাস্তার দু’ধারে বৃক্ষনিধন যজ্ঞ। চলতি মাসেই সবার চোখের সামনে ডাল কাটার নাম করে বিশাল একটি বটগাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে এক প্রোমোটারের বিরুদ্ধে। পুরসভা ও বনদপ্তর ঠুঁটো হয়ে বসে রয়েছে। অথচ, এসব হোর্ডিং থেকে ‘ভিউ ট্যাক্স’ আদায় করলে কিছুটা হলেও আয় বাড়ত পুরসভার।
পরিসংখ্যান বলছে, গত অর্থবর্ষে এই খাতে পুরসভা প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা আয় করেছিল। বরানগর পুর-এলাকায় বি টি রোড ছাড়াও রয়েছে পিডব্লুডি রোড, দক্ষিণেশ্বর মোড়, কাশীপুর রোড, এ কে মুখার্জি রোড। এইসব রাস্তাও একইভাবে বিজ্ঞাপনে মুখ ঢেকেছে। আধিকারিকদের দাবি, এই খাতে পুরসভা চাইলে কোটি টাকা আয় করতে পারে। কিন্তু সিংহভাগ হোর্ডিং থেকে ট্যাক্স আদায় হয় না। পুরসভার পবিবর্তে ওই টাকা প্রভাবশালীদের পকেটে যায়। সোমবার পুরসভার সিআইসি মিটিংয়ে বেশ কয়েকজন সদস্য এনিয়ে সরব হন। এই বেআইনি হোর্ডিং ভেঙে পড়ে কোনও বিপদ হলে কে দায় নেবে, ওঠে সেই প্রশ্নও। প্রয়োজনে বেআইনি হোর্ডিং ভেঙে দেওয়ার কথাও বলা হয়। এই পরিস্থিতিতে পুরাসভার চেয়ারম্যান অপর্ণা মৌলিক শুধুমাত্র হোর্ডিং নিয়ে আলোচনার জন্য একটি ‘স্পেশাল মিটিং’ ডাকার কথা জানান। সিআইসি রামকৃষ্ণ পাল বলেন, ‘বিভিন্ন রাস্তা অবৈধ হোর্ডিংয়ে ভরে গিয়েছে। বিপদের আশঙ্কা তো আছেই। পুরসভারও আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এসব হোর্ডিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।’