• আড়িয়াদহের ‘ত্রাস’ জয়ন্তের বেআইনি বাড়ি ভাঙার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট
    বর্তমান | ২০ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর ও কলকাতা: আড়িয়াদহের ‘ত্রাস’ জয়ন্ত সিং জেলে। কিন্তু তাঁর সাগরেদদের হুমকিতে আজও তটস্থ এলাকাবাসী। তবে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে এলাকাবাসীর মধ্যে। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের সিঙ্গল বেঞ্চ তাঁর বেআইনি বাড়ি আট সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে এই নির্দেশ কার্যকর করার কড়া নির্দেশও দেওয়া হয়েছে প্রশাসনকে। কামারহাটি পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,  ২০২৪ সালের জুলাই মাসে খবরের শিরোনামে উঠে আসে জয়ন্ত সিং ওরফে ‘জায়ান্ট’। এলাকার এক যুবক ও তাঁর মাকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। 

    এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর স্থানীয় তালতলা ক্লাবের মধ্যে জয়ন্ত গ্যাংয়ের একের পর এক কুকীর্তির ভিডিও ফাঁস হয়। চোর সন্দেহে নাবালককে ক্লাবের মধ্যে ঢুকিয়ে নৃশংস অত্যাচার থেকে শুরু করে স্থানীয় বাজারের মধ্যে গুলি চালানোর প্রশিক্ষণের মতো ভিডিও সকলের সামনে চলে আসে। এরপর পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে। ওই পর্বে তার দুধ সাদা তিন তলা বাড়ির ছবিও প্রকাশ্যে আসে। জানা যায়, আড়িয়াদহের ১ নম্বর প্রতাপ রুদ্র লেনে প্রায় ১ কাঠা ৮ ছটাক জমির উপরে গড়ে উঠেছিল তার ওই অট্টালিকা। কিন্তু পুরসভার কাছে ওই জমির কোনও রেকর্ডই ছিল না। এমনকী বাড়ির বিল্ডিং প্ল্যানও ছিল না। পরে বিএলআরও রেকর্ড থেকে দাগ ও খতিয়ান নম্বর অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট জমির মালিকের নাম বের করে পুরসভা নোটিস করেছিল। এমনকী, ওই বাড়ি তৈরিতে পুকুরও বোজানো হয়েছিল।

    এনিয়ে পরে হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। এদিন  জয়ন্ত সিংয়ের ওই বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সূ্ত্রের খবর রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় জয়ন্ত জেলে বসেই তার সাম্রাজ্য চালাচ্ছে। ফোনের মাধ্যমে এলাকায় যোগাযোগ রাখছে। প্রভাবশালীর পরিবারের বিশেষ সদস্যরা জেলেও তার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন। 

    গত সপ্তাহে তাঁর এক সাগরেদ ভয় দেখাতে সমাজমাধ্যমে লাইভ ভিডিও করে ওই কেসের সাক্ষীদের খুনের হুমকি দিয়েছিল। তা নিয়ে থানায় অভিযোগও হয়েছিল। ওই আবহে হাইকোর্টের নির্দেশ এলাকাবাসীর কাছে বড় স্বস্তি। কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, ওই বাড়ি বেআইনি ভাবে তৈরি হয়েছিল। পুরসভা নোটিসও করেছিল। শুনেছি আজ হাইকোর্টের বিচারপতি ওই বাড়ি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন। আইন মেনেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)