বারুইপুরেও তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার? দ্রুত পরীক্ষামূলক খননকাজ শুরু করতে চায় ওএনজিসি
বর্তমান | ২০ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, বারুইপুর: উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের পর এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর। এখানেও কি রয়েছে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার? এই নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা। অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস কর্পোরেশন (ওএনজিসি) বেগমপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে খোঁড়াখুঁড়ির প্রস্তুতি নিচ্ছে। খননকাজ চালানোর জন্য যে যন্ত্রের প্রয়োজন তা নিয়ে আসার জন্য রাস্তা তৈরির কাজ জোরকদমে চলছে। জানা গিয়েছে, তিন বছর ধরে খনন কাজ চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে ওএনজিসি’র। তাই কর্মী-আধিকারিকদের থাকার জন্য ঘর, কনফারেন্স রুম ইত্যাদি তৈরির কাজও চলছে।
জানা গিয়েছে, বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার বেগমপুর পঞ্চায়েতের ২০০ কলোনি এলাকা। সে এলাকা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ভিতরে আছে একটি ফাঁকা মাঠ। বছর দেড়েক আগে ওএনজিসি’র কর্তারা সেখানে পরিদর্শনে এসেছিলেন। মাটির ভিতরের অংশ থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তারপর অনুমান, সেখানে মাটির ভিতর খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস মিলতে পারে। এবার রীতিমতো প্রস্তুত হয়ে এসেছে ওএনজিসি। ওই গ্রামে কৃষকদের থেকে জমি অধিগ্রহণ করার কাজ শেষ। তার জন্য তাঁদের দু’লক্ষ টাকা করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। খনন করতে ব্যবহার হবে ‘রিক মেশিন’। সে যন্ত্র এই এলাকায় নিয়ে আসতে পাকাপোক্ত রাস্তার প্রয়োজন। তাই গ্রামের মেঠো পথকে কংক্রিটের রাস্তায় পরিণত করার কাজ হচ্ছে। তেল সংস্থা সূত্রে খবর, মেশিন আসার পর খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়ে যাবে। এই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রিয়া বর্মন বলেন, ‘ওএনজিসি কর্তারা ১০০ শতাংশ আশাবাদী যে, এখানে খনন চালিয়ে প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল মিলবে।’
বছরচারেক আগে অশোকনগরে প্রাকৃতিক তেল ও গ্যাস উত্তোলন হয়েছিল। সেই ঘটনার পর এখন আশায় বুক বাধছেন বেগমপুরের গ্রামবাসীরা। কারণ এখানে তেল পাওয়া গেলে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে। পাশাপাশি খনিজ তেলের মানচিত্রে উঠে আসবে বারুইপুরের নাম। প্রসঙ্গত বেগমপুর পঞ্চায়েত এলাকার বেশিরভাগ মানুষ বাজি শিল্পের উপর নির্ভরশীল। নানা আতসবাজি বানিয়ে তাঁদের সংসার চলে। খনন কাজের পর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান মিললে বিকল্প কর্মসংস্থানের দরজা খুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বারুইপুর পূর্বের বিধায়ক বিভাস সরদার বলেন, ‘এক হাজার একরেরও বেশি জমিতে ওই সংস্থা কাজ করবে। এর ফলে এলাকার আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটবে। কর্মসংস্থানের পথ খুলতে পারে।’
বেগমপুরের ২০০ কলোনির বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডল ও শংকর মণ্ডল নিজেদের জমি দিয়েছেন। তাঁরা বলেন, ‘আমাদের থেকে জমি অধিগ্রহণ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। এই কাজ হলে এলাকার অনেকের কর্মসংস্থান হবে। আমরা তাই চাই। বিধায়ক নিজেও এই কাজের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন।’ প্রসঙ্গত যে জায়গায় কাজ চলছে তার থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে রয়েছে লোকবসতি। কিছু চাষের জমি রয়েছে। আর বাকিটা ফাঁকা, নির্জন জায়গা।