• শর্ত সাপেক্ষে হাই কোর্টে জামিন পেলেন বর্ধমান আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ১২ তৃণমূল নেতা-কর্মী
    প্রতিদিন | ২০ মে ২০২৫
  • নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান: দলীয় কর্মীকে খুনের চেষ্টার মামলায় সাজা প্রাপ্ত ১২ জন তৃণমূল নেতাকর্মীর শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার হাইকোর্টের ২৬ নম্বর রুমে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ সব্বার রশিদির এজলাসে মামলাটির শুনানি হয়। এদিন সাজাপ্রাপ্তদের পক্ষের আইনজীবী শেখর বসু জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন। বিচারপতিরা অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছেন। তবে এখনই জেলমুক্তি ঘটছে না ওই ১২ জনের।

    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১২ জনের অস্থায়ী জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে। মাসে একদিন বর্ধমান  সিজেএম আদালতে হাজিরা দিতে হবে। হাইকোর্টের নির্দেশের নথি বর্ধমান সিজেএম আদালতে জমা দিয়ে পাকাপোক্ত জামিন নিতে হবে। সিজেএম জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিলে তবেই জেল থেকে ছাড়া পাবেন ওই ১২ জন সাজাপ্রাপ্ত।

    জামিন পাওয়া ১২ জন সাজাপ্রাপ্তর মধ্যে রয়েছেন বর্ধমান-১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানস ভট্টাচার্য, রায়ান-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কার্তিক বাগ, রায়ান অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি শেখ জামাল সহ অন্যরা। জামিন মঞ্জুর হলেও এই সাজাপ্রাপ্ত পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ বহাল থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার সাজাপ্রাপ্তদের বরখাস্ত করার জন্য জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন।

    জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে রায়ান-১ পঞ্চায়েতের তৎকালীন সদস্য জীবন পালের বাবা দেবু পালের উপর হামলা চালায় দলেরই একাংশের লোকজন। ঘটনায় দেবুবাবুর একটি চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কাকলি গুপ্ত তা-সহ ১৩ জন নেতানেত্রী ও কর্মীদের নামে বর্ধমান আদালতে মামলা দায়ের হয়। এই মামলায় গত ১ এপ্রিল বর্ধমান আদালতের ফার্স্ট ট্র্যাক (দ্বিতীয়) কোর্টের বিচারক অরবিন্দ মিশ্র ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। পরে দোষীদের মধ্যে ১২ জনের জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। কেবলমাত্র শারীরিক অসুস্থতার জন্যে ব্লক সভাপতি কাকলি গুপ্ত তায়ের তিন বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে আবেদনের ভিত্তিতে তাঁর জামিনও মঞ্জুর করে জেলা আদালত। বাকি ১২ জনকে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। এই ১২ জন সাজাপ্রাপ্ত নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। একইসঙ্গে জামিনের আবেদন করা হয়। হাই কোর্ট এদিন অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছে।

    হাই কোর্টে জামিন মঞ্জুর হওয়ার পর আক্রান্তের ছেলে জীবন পাল বলেন, ‘‘মামলাটি হাই কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। বিচারপতি সাজাপ্রাপ্তদের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন। আদালতের এই সিদ্ধান্তের উপরে মন্তব্য করার কিছু নেই। বর্ধমান আদালতের বিচারক দোষীদের সাজা শুনিয়েছিলেন। এখন হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কি রায় দেন সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছি।’’
  • Link to this news (প্রতিদিন)