• কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী, বাংলাদেশি সীমান্ত রক্ষীদের হাতে আটক উকিল বর্মনের ছেলেকে চাকরি
    প্রতিদিন | ২০ মে ২০২৫
  • বিক্রম রায়, কোচবিহার : কাঁটাতারের ওপারের জমির প্রসঙ্গ এবার সংসদে তুলে ধরার প্রস্তুতি শুরু করেছেন কোচবিহারের সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। অন্যদিকে, বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে আটক উকিল বর্মনের ছেলে পরিতোষ বর্মনকে কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এজেন্সির মাধ্যমে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে উকিল বর্মনের পরিবারে। আনুষ্ঠানিকভাবে সোমবার তাঁকে নিয়োগ করা হয়।

    কোচবিহার জেলায় মেখলিগঞ্জ মহকুমা, মাথাভাঙা এবং দিনহাটা মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে ভারতীয় কৃষকদের জমি রয়েছে। তুফানগঞ্জ মহকুমাতেও কিছুটা এই ধরনের জমি রয়েছে যদিও তার পরিমাণ কম। এই জমিতে কাজ করতে গিয়ে শীতলকুচিতে দুষ্কৃতীদের হাতে অপহৃত হয়েছিলেন উকিল বর্মন। আর সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার পাঞ্জাবের মতো ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এই জমিগুলো কেন্দ্র সরকারের অধিগ্রহণের দাবি নিয়ে সরব হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন কোচবিহারের সাংসদ। উকিল বর্মনের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর থেকে কার্যত কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে কাজ করতে গিয়েও আতঙ্কে থাকছেন কৃষকরা। অধিকাংশ চাষি সেই জমিতে চাষ পর্যন্ত করতে যাচ্ছেন না। কিছু ক্ষেত্রে বিএসএফ গেট না খোলায় সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা। 

    তবে প্রশ্ন উঠছে, কয়েক হাজার কৃষক যঁাদের জমি কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে রয়েছে তঁাদের ভবিষ্যৎ কি হবে? কোচবিহারের সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, “কোচবিহার জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। যে সমস্ত স্থানে কাঁটাতারের বেড়া হয়েছে সেখানে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় কৃষকদের বিঘার পর বিঘা কৃষি জমি ওপারে রয়ে গিয়েছে। সেখানেই কাজ করতে গিয়ে উকিল বর্মনকে অপহৃত হতে হয়েছিল এবং ২৯ দিন তঁাকে বাংলাদেশি জেলে থাকতে হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে অন্যান্য চাষিরাও আতঙ্কে রয়েছেন। কিছু ক্ষেত্রে সময়মত বিএসএফের পক্ষ থেকে গেট না খোলাতেও চাষিরা সমস্যায় পড়ছেন। কাজেই এই বিষয়টি এবার সংসদের অধিবেশনে তুলে ধরব।” তাছাড়া কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেও তিনি এই বিষয়টি উপস্থাপন করবেন যাতে, পাঞ্জাবের মতো পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্তের এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে থাকা এই জমিগুলি কেন্দ্র সরকার অধিগ্রহণ করে। সেখান থেকে যে অর্থ চাষিরা পাবেন সেটা দিয়ে তঁারা কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে চাষ জমি কিনে চাষাবাদ করতে পারবেন। সাংসদের এই ধরনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন উকিল বর্মন।

    তাঁর কথায়, “কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে তার চার বিঘা জমি রয়েছে। সেই জমি তিনি চাইছেন কেন্দ্র সরকার অধিগ্রহণ করুক। অন্যান্য কৃষকদের জমিও সেখানে রয়েছে এবং তঁারাও নিজের জমিতে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন।” তবে তঁার ছেলেকে অস্থায়ী চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তিনি রাজ্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “উকিল বর্মন ফিরে আসার পর বলেছিলেন তিনি আর জমিতে কাজ করতে যেতে চান না। তঁার স্ত্রীর দাবি ছিল, যাতে সংসার চলে তার ব্যবস্থা করা হোক। তাই ছেলেকে সুপারভাইজার হিসাবে এদিন এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়োগ করা হয়েছে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)