• হিংসাত্মক হলে আন্দোলনের সারমর্ম লোপ পায়: অভিষেক
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২০ মে ২০২৫
  • ‘হিংসাত্মক হলে আন্দোলনের সারমর্ম হারিয়ে যায়’, এ বার বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শান্তির বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই সঙ্গে, পাকিস্তানের মুখোশ খুলতে কেন্দ্রীয় দল থেকে বহরমপুরের তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ পাঠানের নাম প্রত্যাহার করা হল কেন তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলের তরফে কোন প্রতিনিধি যাবেন, তা একমাত্র দলই ঠিক করবে।

    উল্লেখ্য, চাকরিহারাদের অবস্থান বিক্ষোভে তাঁদের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রেক্ষিতে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সোমবার অভিষেক বলেছেন, ‘ভারতের যে কোনও প্রান্তে গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে। তাঁদের আন্দোলনকে ছোটো করার ধৃষ্টতা আমার নেই। আমি চাই না কোনওভাবে এই আন্দোলনকে রাজনৈতিক রঙে রাঙানো হোক!’ এরপরই গান্ধীজির অহিংসার নীতি স্মরণ করিয়ে সাংসদ অভিষেকের কথায়, ‘আন্দোলন কখনও হিংসাত্মক বা উগ্র হয় না।’

    একশো দিনের কাজে বাংলার প্রাপ্য অর্থ আদায়ে দিল্লির বুকে যেভাবে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল তৃণমূল, সেই স্মৃতিচারণা করে সাংসদ জানিয়েছেন, জোর করে গেট ভাঙা হয়েছে, এ রকম কিছু ফুটেজ তিনি দেখেছেন। তবে এর জন্য তিনি কাউকে দায়ী করেননি। একশো দিনের কাজের জন্য দিল্লিতে আন্দোলনের সময় বাংলা থেকে অসংখ্য মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। জনপ্রতিনিধি থেকে সাধারণ মানুষের চুলের মুঠি ধরে টেনে বের করে দেওয়া হয়েছিল। ফের রাজভবনের বাইরে শান্তিপূর্ণভাবে ধরনা চলেছে।

    শুধু তাই নয়, দফায় দফায় চাকরিহারাদের আন্দোলনকে সংযত করার আর্জি জানিয়েছেন অভিষেক। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, আন্দোলনে আপত্তি নেই, তবে তা যেন বেলাগাম না হয়। অভিষেকের দাবি, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে, গেট ভাঙা বা বলপ্রয়োগ হলে আন্দোলনের সারমর্ম হারিয়ে যায়। এরপরই এসএসসি ইস্যুতে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করে চাকরিহারাদের ভরসা জুগিয়েছেন তিনি। অভিষেক জানিয়েছেন, এই মামলায় রাজ্য সরকার তৎপর। সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন ফাইল করা হয়েছে। আজ না হয় কাল এর সুরাহা হবে ও ন্যায়বিচার মিলবে। সরকার ও বিচারব্যবস্থার উপর ভরসা রাখার অনুরোধ জানান তিনি।

    অন্যদিকে, পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক দরবারে সন্ত্রাসের প্রমাণ দেওয়ার লক্ষ্যে কেন্দ্র সর্বদলীয় এক প্রতিনিধি দল তৈরি করেছে। সেই দলে তৃণমূলের তরফে ইউসুফ পাঠানের নাম দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু ইউসুফের সফরের বিষয়টি নাকচ করে দল। এ নিয়ে অভিষেক স্পষ্ট করেন, তৃণমূলের তরফে কে যাবেন, তা একমাত্র তৃণমূলই ঠিক করবে। অভিষেকের প্রশ্ন, পহেলগাম ইস্যুতে কেন্দ্রের সমস্ত পদক্ষেপের পাশে তৃণমূল থাকা সত্ত্বেও কীভাবে আলোচনা না করে দলের প্রতিনিধির নাম ঠিক করল বিজেপি? এক্ষেত্রে কে যাবে সেটা সংশ্লিষ্ট দলের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। এটা বিজেপি ঠিক করে দিতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পহেলগাম ইস্যুতে তৃণমূলের তরফে কেন্দ্রকে সমর্থনের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে অভিষেক। কিন্তু কেন্দ্রের এই একতরফা সিদ্ধান্তকে দল কোনওভাবেই সমর্থন করে না। আমরা অপারেশন সিঁদুরের বিরোধিতাও করছি না, বরং আন্তর্জাতিক ইস্যুতে কেন্দ্রের পাশেই রয়েছি।’
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)