মাত্র বছর দেড়েক আগেই পরিণতি পেয়েছিল দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের পর যুগলের লাল-নীল সংসারে ক্রমশই বোনা চলছিল একাধিক স্বপ্ন। আচমকায় থমকে গেল সব কিছু। স্বামীর অকাল মৃত্যুর শোকে জীবনের প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেললেন স্ত্রীও। মর্মান্তিক ঘটনা উলুবেড়িয়ায় বাগনান থানার চন্দ্রভাগ গ্রাম পঞ্চায়েতের কানাইপুর গ্রামে।
স্বামীর পথ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন স্ত্রী রিম্পা প্রসাদ। কিন্তু এসে এমন পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি। হাসপাতালে পৌঁছে শুনলেন ততক্ষণে সব শেষ। দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে স্বামী টিঙ্কু প্রসাদের। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হন ২২ বছরের তরুণীও। এমন ঘটনায় হতভম্ব সকলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহুদিনের প্রেমের সম্পর্ক রিম্পা ও টিঙ্কুর। বছর দেড়েক আগে পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান টিঙ্কুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন প্রেমিকা টিঙ্কু। সেই সুখের সংসারে মেয়াদ দেড় বছর পেরোনোর আগেই শেষ।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে টিঙ্কু তার বন্ধুদের সঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাতে হোটেলে খাওয়া দাওয়া সেরে বাড়ি ফেরার পথে পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয় টিঙ্কু। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে প্রথমে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে ও পরে তাঁকে উলুবেড়িয়া শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
এদিকে দুর্ঘটনায় স্বামীর আহত হওয়ার খবর পাওয়ার পর রাতেই উলুবেড়িয়া মেডিকেল কলেজে ছুটে আসেন রিম্পা। জানা গিয়েছে, স্বামীর মৃত্যুর খবর শোনার পরেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন রিম্পা। কিছুক্ষণ হাসপাতালে থাকার পর সেখান থেকে তিনি বেরিয়ে যান। যদিও রাতে শ্বশুর বাড়িতে ফেরেননি বলে জানা যায়।
পরে খোঁজাখুঁজি শুরু হলে, মঙ্গলবার সকালে উলুবেড়িয়া থানার ডোমপাড়া এলাকায় একটি জায়গা থেকে রিম্পার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ। টিঙ্কু প্রসাদের বাবা রাম প্রসাদ জানান, ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পরেই বৌমা আত্মঘাতী হয়েছে। দু’জনেরই মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনায় গোটা পরিবারে শোকের ছায়া।