তেহট্টের বিধায়কের মৃত্যুতে থমকাবে না নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্ত: হাইকোর্ট
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২১ মে ২০২৫
তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার মৃত্যুতে থমকাবে না নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত। সিবিআই যেভাবে তদন্ত করছিল, সেভাবেই করবে। মঙ্গলবার একথা জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অন্যতম অভিযুক্তের মৃত্যু হলেও সিবিআই দুর্নীতির তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। আদালত জানিয়েছে, এই দুর্নীতিতে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারেন। তা খুঁজে বার করার প্রয়োজন। এর আগে হাইকোর্টের সিবিআই জানিয়েছিল, তাপসের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে এও জানানো হয়, বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি সম্প্রতি দিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ।
নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত তাপস সাহা। তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে তল্লাশিও চালান আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ১২ জন আধিকারিক তাপসের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিলেন। চাকরি দেওয়ার নাম করে তাপস সাহা কয়েক কোটি টাকা তুলেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তদন্তের স্বার্থে সিবিআই অতীতে বার কয়েক তাপসকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল। তাঁর কণ্ঠস্বরও সংগ্রহ করে সিবিআই। এরই মধ্যে সপ্তাহখানেক আগেই তাপসের মৃত্যু হয়। তার পরে অনেক মহলেই প্রশ্ন ওঠে, প্রাথমিক নিয়োগ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত তাপসের মৃত্যুর কারণে কি তদন্ত বন্ধ হয়ে যাবে? মঙ্গলবার হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, অভিযুক্তের মৃত্যুতে দুর্নীতি তদন্ত থমকাবে না। সিবিআই তদন্ত আগের মতোই চালিয়ে যেতে পারবে।
সিবিআইয়ের তরফে শুনানিতে অভিযোগ করা হয়, এই মামলায় রাজ্যের দুর্নীতিদমন শাখার আধিকারিকরা কেস ডায়েরি-সহ সম্পূর্ণ নথি দেয়নি। আদালতে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এসসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী দাবি করেন, সিবিআইকে সব তথ্য, নথি দেওয়া হয়নি। এর ফলে তদন্ত প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। সিবিআইয়ের অভিযোগ, রাজ্যের তদন্তকারী অফিসার সব তথ্য, নথি দিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। দুর্নীতি দমন শাখার অফিসার অনুপম দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এই অভিযোগ শুনে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থার তথ্য সরবরাহ করতে সমস্যা কোথায়? একজন তদন্তকারী অফিসার কি বলতে পারেন সিবিআইকে তথ্য দেব না, আমিই তদন্ত করব? হাইকোর্টের নির্দেশ, কেস ডায়েরি-সহ যাবতীয় তথ্য সিবিআইকে দিতে হবে। রাজ্যও সেই নির্দেশ মানবে বলে আদালতে জানায়। তিন-চার দিনের মধ্যে সমস্ত নথি সিবিআইকে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য।