• মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে হবে অত্যাধুনিক 'ক্যান্সার হাব', লক্ষাধিক টাকার রেডিওথেরাপি বিনামূল্যে
    এই সময় | ২১ মে ২০২৫
  • ক্যান্সারের চিকিৎসার খরচ বিপুল। জেলাতে খুব একটা হয়ও না। ছুটতে হয় কলকাতা বা বড় শহরে। এবার জেলাতে ক্যান্সার হাব হতে চলেছে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল লক্ষাধিক টাকার রেডিয়োথেরাপি হবে একদম বিনামূল্যে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সবুজ সংকেত দিয়েছেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের সহায়তাও মিলবে বলে জানা গিয়েছে।

    বর্তমানে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগে ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা অনকোলজিস্ট রয়েছেন। সেই ২০১২ সাল থেকেই চলছে ক্যান্সারের ওপিডি বা আউটডোর পরিষেবা। তবে ইনডোর পরিষেবা এখনও চালু হয়নি। যদিও পরবর্তী সময়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে 'কেমোথেরাপি' শুরু হয়। তবে, পুরোটাই আউটডোরেই।

    মফস্বল শহরে ক্যান্সারের উন্নতমানের চিকিৎসার জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সম্পূর্ণ পৃথক একটি ভবন গড়ে তোলা হয় ২০১৬-১৭ সাল নাগাদ। ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ভবনের উদ্বোধন করেন। যদিও সেই ভবনে এখনও পর্যন্ত 'রেডিয়োথেরাপি' চালু করা সম্ভব হয়নি।

    এ বার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করা সেই ভবনে চালু হবে রেডিয়োথেরাপির অন্তর্গত তিন চিকিৎসা, যথাক্রমে- লিনাক (Linac), ব্র্যাকি থেরাপি (Brachytherapy) এবং পেট সিটি (PET-CT)। পিপিপি মডেলে উন্নতমানের রেডিওথেরাপি মেশিন বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার অধ্যাপক ইন্দ্রনীল সেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রাথমিক ছাড়পত্র মিলেছে বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী।

    মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্সার বিভাগের প্রধান ডঃ সৈকত সিট বলেন, ‘ক্যান্সারে মূলত তিন ধরনের চিকিৎসা হয়। কেমোথেরাপি, রেডিয়োথেরাপি এবং সার্জারি। আমাদের এখানে কেমোথেরাপি হয়। এছাড়াও, সার্জারি বিভাগে ছোটখাটো কিছু অস্ত্রোপচারও করা হয়। এবার রেডিয়োথেরাপি পরিষেব চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া মিটে গেলেই রেডিয়োথেরাপির অত্যাধুনিক মেশিন বসবে। বাইরে যেখানে ৭৫-৮০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা অবধি খরচ হতো, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে তা সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই করাতে পারবেন রোগীরা।’

    প্রসঙ্গত, এখন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ক্যান্সার ক্লিনিকে সপ্তাহে দু'দিন (মঙ্গলবার ও শুক্রবার) কেমোথেরাপি-র চিকিৎসা হয়। কেমোথেরাপি নিয়ে বাড়ি চলে যান রোগীরা। এ জন্য ৮টি বেড রয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই এই পরিষেবা পান ক্যান্সার আক্রান্তরা। ২০১৮ সাল থেকে নতুন এই রেডিয়োথেরাপি ভবনে বা ক্যান্সার ক্লিনিকেই চলে ক্যান্সারের ওপিডি। সপ্তাহে চারদিন (সোম, মঙ্গল ও বৃহস্পতি, শুক্র) সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টো পর্যন্ত।

    হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ‘সাধারণ মানুষের স্বার্থে প্রত্যন্ত এই এলাকায় উন্নত মানের ক্যান্সার হাব গড়ে ওঠাই তো উচিত। আমাদের সেই পরিকল্পনা এবং জায়গাও আছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা চলছে।’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, ‘আমরাও এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছি।’

  • Link to this news (এই সময়)