সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: পরিদর্শনে আসবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। তাই কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চেহারা বদলে দিল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জঞ্জালের স্তূপ, রাস্তার ধারে খালি জায়গায় ঝোপজঙ্গল ভোর থেকেই কেটে সাফ করা হল। হাতে সময় কম, তার মধ্যেই ক্যাম্পাসকে টিপটপ লুক দিতে কোনও কসুর বাকি রাখল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এজন্য একাধিক আর্থ মুভার দিয়ে নিমেষের মধ্যে সব সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও অনেক কাজ বাকি। করিডর, হাসপাতালের চারপাশ পরিস্কার করে ঝাঁ-চকচকে চিত্র তুলে ধরতে হবে মুখ্যসচিবের সামনে। সেজন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের থেকে আনা হল বাড়তি সাফাই কর্মী। হাসপাতালের নিজস্ব সাফাই কর্মীর সঙ্গে এসজেডিএ এবং পঞ্চায়েত মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশো সাফাই কর্মী এদিন দুপুরের মধ্যে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আনাচে-কানাচে থেকে শুরু করে প্রিন্সিপালের অফিস পর্যন্ত রাস্তা, করিডর সব ঝাঁ চকচকে করে তোলেন। সেই সঙ্গে চারদিকেই ছড়ানো হয় দেদার ব্লিচিং পাউডার। দূর থেকে রাস্তা ও ড্রেনের দু›ধারে সাদা আস্তরণ দেখে সহজেই বোঝা যাচ্ছিল তড়িঘড়ি সব সাফসুতরো করা হয়েছে। এসব দেখে রোগীর স্বজনরা মুচকি হেসে বলছেন, সারা বছর পুঁতিগন্ধময়, অপরিস্কার ক্যাম্পাস, করিডর, ওয়ার্ড হয়ে থাকলেও কর্তৃপক্ষ ঘুরেও তাকায় না। এখন বড় কর্তারা আসছেন দেখে ওঁদের টনক নড়েছে। চাপে পড়েছেন। অনেকটা সেরকমই দেখা যায় এদিন। ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক সাফাই কর্মীদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে প্রিন্সিপালের অফিসের সামনে সাঁটানো পোস্টার সরিয়ে দেন।
প্রিন্সিপাল অফিসার উল্টোদিকে মাঠের মধ্যে দীর্ঘদিনের বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স স্ট্যান্ড সরানো নিয়ে পুলিস ও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যেই চাপানউতোর চলেছে। কেউই সরাতে পারেনি এই স্ট্যান্ড। কিন্তু এদিন নিমেষের মধ্যে সেই অ্যাম্বুল্যান্স স্ট্যান্ড উধাও হয়ে যায়। একটিও বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়নি। রোগীরা এসব দৃশ্য দেখে অবাক। তাঁদের প্রশ্ন, এটা এতদিন হয়নি কেন! সবটাই আজ একদিনের জন্য? মেডিক্যাল ফাঁড়ির পুলিস বলে, এদিন অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা সহযোগিতা করছে। তাই ওদের কিছু বলতে হয়নি। নিজেরাই অ্যাম্বুল্যান্স সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এদিন চিকিৎসা করাতে এসে হাসপাতালের ভিতরে বাইরে এরকম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেখে সকলেই বলেন, মুখ্যসচিব কেন রোজ পরিদর্শনে আসেন না। তাহলে অন্তত অপরিস্কার মেডিক্যালে আমাদের চিকিত্সা করাতে হত না।