• চমকডাঙি-লালটং বস্তি এখন তিস্তাপল্লি
    বর্তমান | ২১ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: গত বছর বর্ষায় তিস্তা নদীর গতিপথ বদলে গিয়ে ডাবগ্রাম-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের লালটং ও চমকডাঙি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ঘরবাড়ি, কৃষিজমি তিস্তা গিলে খায়। বাসিন্দারা চরম বিপাকে পড়েন। তাঁদের পাশে দাঁড়ায় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। একটি স্কুলে পরিবারগুলিকে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। মঙ্গলবার ফুলবাড়িতে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে লালটং ও চমকডাঙি গ্রামের ১৩১টি পরিবারকে জমির পাট্টা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাম পঞ্চায়েতের মাজুয়ায় পরিবারগুলি পেল পাট্টা। নতুন করে জীবন শুরু করার পাশাপাশি এলাকার নতুন নামকরণ ‘তিস্তাপল্লি’ করেন মুখ্যমন্ত্রী। 

    পাহাড় থেকে নেমে সেভকে তিস্তা অনেকটাই খড়স্রোতা। নদী বর্ষায় ভয়াল রূপ ধারণ করে। বেশ কয়েক বছর ধরেই বর্ষায় নদী ধীরে ধীরে গ্রাস করছিল ওই দুই গ্রামকে। কিন্তু গতবছর বর্ষায় দু’টি গ্রামকেই গিলে খায়। কিন্তু এই নদীকে কেন্দ্র করেই একাংশ মানুষের জীবিকা নির্বাহ করে। মুখ্যমন্ত্রী ভূমিহারা পরিবারগুলিকে জমির অধিকার তুলে দেওয়ায় খুশির হওয়া দুর্গতদের মধ্যে। 

    উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে সিকিমে হ্রদ বিপর্যয়ে তিস্তা সমতলে নামার সময় তার গতিপথ অনেটাই পরিবর্তন করেছে। তার আঁচ পড়েছিল ওই দুই গ্রামে। কিন্তু গত বছর ভারী বৃষ্টিতে লালটং ও চমকডাঙি গ্রাম ধুয়ে-মুছে যায়। ভিটেমাটি চলে যায় তিস্তার গ্রাসে। রক্ষা করা যায়নি আসবাবপত্র থেকে গবাদিপশুও। সেসময় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা ভূমিহারা পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ান। তাঁদের সাহায্যের বার্তা দিয়েছিলেন জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ির তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। প্রত্যেকটি পরিবারকে সুরক্ষিত রাখতে সংশ্লিষ্ট গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে খোলাচাঁদ ফাঁপড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। সেখানেই থাকার বন্দোবস্ত করা হয়। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ব্লক অফিসের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্ত তথ্য রিপোর্ট আকারে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। নিরাশ্রয় পরিবারগুলিকে স্থায়ী ঠিকানা খুঁজে দিতে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিল সরকার। এদিন সেই চিন্তাভাবনার বাস্তবরূপ পেল। 

    এদিন মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে জমির পাট্টা তুলে দিয়ে জায়গাটির নতুন নামকরণ করায় খুশি বাসিন্দারা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিস্তা নদী একদিকে যেমন কিছুটা ক্ষতি করতে পারে, তেমনই মানুষের উপকারেও লেগে থাকে। তাই ওই নদীকে সম্মান জানিয়ে তিস্তাপল্লি নতুন নামকরণ করলাম।
  • Link to this news (বর্তমান)