রামপুরহাট শহরের জমা জলের সমস্যা দূর করতে মাস্টার প্ল্যান
বর্তমান | ২১ মে ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: এমইডিকে দিয়ে তৈরি করা হবে মাস্টার প্ল্যান। রামপুরহাট শহরের জমা জলের সমস্যা দূর করতে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ উদ্যোগ। ফলে আগামী দিনে রামপুরহাট শহরের বাসিন্দাদের জমা জলের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে রামপুরহাট শহরের ব্যস্ততম ধুলোডাঙা রোড, এমএনকে রোড, ফটক দুয়ার এলাকা। যার জেরে গত শুক্রবার ধুলোডাঙা রোডের ধারে হনুমান মন্দির লাগোয়া নিকাশি নালার উপর চারটি অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেয় পুরসভা।
কিন্তু তারপরও শনিবার সন্ধ্যায় বৃষ্টিতে ওই রাস্তা সহ এমএনকে রোড, জাতীয় সড়কের শ্রীফলা মোড়, ফটক দুয়ার এলাকা, মহাজন পট্টির রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ব্যাপক দুর্ভোগের মুখে পড়েন নাগরিকরা। ফিবছর এমনই অবস্থা হয় শহরের। বৃষ্টি হলেই কেন ফিবছর শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ছে? প্রশ্ন তোলেন রামপুরহাটের নাগরিকরা। এরই মধ্যে সোমবার ধুলোডাঙা রাস্তা কেটে জল বের করার জন্য হিউম পাইপ বসানো হয়।
এদিকে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে এদিন রামপুরহাট শহর কার্যালয়ে কাউন্সিলারদের নিয়ে বৈঠক করেন বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা চেয়ারপার্সন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে গরহাজির ছিলেন ৩ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় কাউন্সিলার অর্ণব গঙ্গোপাধ্যায় ও অশ্বিনী তেওয়ারি। আশিসবাবু বলেন, তাঁরা যে আসতে পারবেন না, তা আগাম জানিয়েছিলেন।
বৈঠকে কাউন্সিলারদের মধ্যে কেউ বলেন, নিয়মকে তোয়াক্কা না করে অনেক বহুতল গড়ে উঠেছে। সেগুলির জল নিষ্কাসন ব্যবস্থা ঠিক নেই। আবার কেউ বলেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠান ভবন, শপিং মল ও বিয়েবাড়ি শোলা ও শালপাতার এঁটো থালা, বাটি সহ নানা আবর্জনা নিকাশি নালায় ফেলে দিচ্ছে। কেউ বলেন, শহরাংশের কাঁদর পরিষ্কার করলে হবে না, গ্রামের অংশে কাঁদরটি মজে থাকায় জল বেরতে না পেরে রাস্তায় উঠে পড়ছে। এছাড়া জাতীয় সড়কের দু’ধারের মহানালা উপর অবৈধ নির্মাণ ও বুজে থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন অনেকে। এরপরই নিকাশি সমস্যা মেটাতে মাস্টার প্ল্যান করার সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক শেষে পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন ভকত বলেন, রামপুরহাট শহরের জল নিকাশির সমস্যা নিয়ে খুব শীঘ্রই একটি প্রশাসনিক বৈঠক হবে। সেখানে টিআরডিএ, এসডিও, এমইডির লোকজন, কাউন্সিলার ও লাগোয়া গ্রামাঞ্চলের জনপ্রতিনিধিরা থাকবেন। কারণ, শহরের জল নিকাশির অন্যতম মাধ্যম কাঁদরের পুরো অংশ ও জাতীয় সড়কের দু’ধারের মহানালা সংস্কারের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে এমইডিকে দিয়ে মাস্টার প্ল্যানের চিন্তাভাবনা করেছেন বিধায়ক। সেই সঙ্গে কাউন্সিলারদের নিজ নিজ এলাকার নালা যাতে পরিষ্কার থাকে, সেব্যাপারে সক্রিয় হতে বলেছেন। সেই সঙ্গে কয়েকটি অনুষ্ঠান বাড়ি, শপিংমল, বিয়েবাড়িগুলিকে নোটিস করা হচ্ছে।
অন্যদিকে আশিসবাবু বলেন, বহু ফ্ল্যাটের নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক নেই। সেগুলিকে নোটিস দেওয়ার জন্য পুরসভাকে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে কাউন্সিলারদের টিম করে যেখানে জল জমা হচ্ছে, সেগুলি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
কাঁদরের যে অংশ গ্রামাঞ্চলের মধ্য দিয়ে গিয়েছে, সেই অংশও পরিষ্কার করা প্রয়োজন। নাহলে জল যেতে পারছে না। খুব শীঘ্রই এসডিওর উপস্থিতিতে প্রশাসনিক বৈঠক করা হবে। এমইডিকে দিয়ে পুরো সার্ভে করাব। ৯ জুন বিধানসভা শুরু হচ্ছে। তখন এই নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে আলোচনা করব।