১০০ দিনের কাজ বন্ধ, শালবীজ বিক্রি করে রোজগার ঝাড়গ্রামের আদিবাসী মহিলাদের
বর্তমান | ২১ মে ২০২৫
সমীর মাহাত, ঝাড়গ্রাম: কেন্দ্রের ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকায় ঝাড়গ্রাম জুড়ে রুজি রোজগারে টান পড়েছে। আদিবাসী মহিলারা জঙ্গলের শালবীজ সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন। সেই বীজ রোদে শুকিয়ে খোসা ছাড়িয়ে পরিস্কার করে মহাজনদের কাছে বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি বীজের তারা পাচ্ছেন ৮ থেকে ১০ টাকা। ঝাড়গ্রাম ল্যাম্পস থেকে এই বীজ কেনা বন্ধ রয়েছে। ফলে এলাকার কিছু মহাজন এই বীজ কিনে ওড়িশা ও ছত্রিশগড়ের মহাজনদের বিক্রি করছেন। এই নিয়ে ডব্লুবিটিডিসিসির ঝাড়গ্রামের রিজিওনাল ম্যানেজার সুরজিৎ পাল বলেন, ডব্লুবিটিডিসিসি দপ্তর থেকে ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন ল্যাম্পসে ২০১৯ সালে শালবীজ ক্রয় করা হয়েছিল। এই বছর সেই রকম কোনও টার্গেট নেই। আমরা শালবীজ নিতে পারি তবে আমাদের মেম্বার ছাড়া অন্য কারও কাছ থেকে নেব না। এবছর শাল বীজের সরকারি মূল্য রয়েছে কেজি প্রতি ২২ থেকে ২৪ টাকা। ২০১৯ সালে শালবীজ কেনার ক্ষেত্রে গভর্নমেন্টের স্পেশাল টার্গেট ছিল।
শালবীজ থেকে উৎপাদিত তেল মেশিনারি যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য, সাবান ফ্যাক্টরি ও কসমেটিক উৎপাদন ফ্যাক্টরিগুলিতে প্রয়োজন হয়। ওড়িশা ও ছত্তিশগড় এলাকার মহাজনরা ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে বেশিরভাগ এই বীজ কিনে নিয়ে যায়। ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন জঙ্গলে গিয়ে দেখা গেল, আদিবাসী মহিলারা ঝাড়ু দিয়ে পড়ে থাকা শালবীজ সংগ্রহ করেছেন তারা বলেন, আমরা সারাদিনে একেকজন ২৫-৩০ কেজি মতো বীজ সংগ্রহ করছি। রোদে শুকিয়ে বীজের খোসা ছাড়িয়ে বিক্রি করা হয়। ঘর থেকে মহাজনরা ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি দরে এই বীজ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। রুজি রোজগারের কোনও উপায় নেই।
এক মহিলা বলেন, হাতির ভয়ে আমরা গভীর জঙ্গলে যাই না। দলবেঁধে আসি। জনবহুল রাস্তার পাশের জঙ্গলগুলি থেকেই বীজ সংগ্রহ করা হয়। রোদের সময় বীজ সংগ্রহ করতে হয়। বেশি বৃষ্টি হলে বীজ অঙ্কুরিত হয়ে যাবে।সেগুলি বিক্রি হয় না। এই নিয়ে কেঁন্দুয়া গ্রামের বাসিন্দা দুবরাজ মাহাত বলেন, আমাদের এলাকার মহিলারা দল বেঁধে শালবীজ সংগ্রহে বেরিয়ে পড়ে। রোদে পাকা রাস্তায় সেই বীজ শুকনো করে। গ্রামেরই এক মহাজন তাদের কাছ থেকে বীজ কিনে নিচ্ছে। এই সময় প্রতি কেজি শালবীজের দাম ১২ টাকা পাওয়া যাচ্ছে। এই নিয়ে ঝাড়গ্রাম ল্যাম্পস এর বিভাগীয় আধিকারিক মোহন টুডু বলেন, এ বছর শালবীজ কেনার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও অর্ডার আসেনি।