• পুলিসের হাতে পাকড়াও বাংলাদেশি আনসারির মা
    বর্তমান | ২১ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বেলডাঙায় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে ছিল বাংলাদেশি মহম্মদ সেলিম আনসারির মা। এবার তাকেও গ্রেপ্তার করল বেলডাঙা থানার পুলিস। কোচবিহার দিয়ে বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরতে গিয়ে বিএসএফের জালে ধরা পড়ে যায় সেলিম ওরফে সেলিমউদ্দিন। মুর্শিদাবাদে ঘাঁটি গেড়েছিল জানতে পেরেই তার ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহে নামে পুলিস ও গোয়েন্দারা। জানা যায়, সেলিমের বাড়ি বেলডাঙার মক্রমপুর এলাকায়। সেখানেই সে ঘর ভাড়া নিয়ে মায়ের সঙ্গে থাকত। সোমবার পুলিস ওই ভাড়া বাড়ি থেকে সেলিমের মাকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত ফতেমা বিবিকে বহরমপুর আদালতে তুলে জেলে পাঠানো হয়েছে। 

    অতিরিক্ত পুলিস সুপার (সদর) মাজিদ ইকবাল খান বলেন, ওই বাংলাদেশি মহিলাকে গ্রেপ্তার করে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বেলডাঙার তমালতলার মাসাদুল শেখের বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল মহম্মদ সেলিম আনসারি এবং তার মা। পুলিসের কাছে প্রথমে নিজেদের বাড়ি বিহার বলে দাবি করলেও পরবর্তীতে ওই মহিলা জানিয়েছে, তাদের আসল বাড়ি বাংলাদেশের কক্সবাজারের চিতাগং ডিভিশনের টেকনাফ থানা এলাকায়। বেশ কয়েক বছর আগে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সীমানা অতিক্রম করে মুর্শিদাবাদে ঢোকে। তারপর বেলডাঙায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে তারা। কয়েকবছর ধরে সেলিম ও তার মা এলাকায় থাকলেও, ওই মহিলা কখনই বাড়ি থেকে বের হতো না। প্রতিবেশী মহিলারাও তাকে কখনও দেখেনি বলে দাবি করেছে। 

    গত শুক্রবার কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে বিএসএফের জওয়ানরা পাকড়াও করে সেলিমকে। ধৃতের কাছ থেকে বৈধ পাসপোর্ট পাওয়া যায়নি। জেরায় সে স্বীকার করেছে, বেআইনিভাবে ভারতীয় আধার কার্ড, প্যান কার্ড বানিয়ে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। এই আধারকার্ড ছিল বিহারের ঠিকানায়। সেই আধারকার্ড দেখিয়ে মুর্শিদাবাদে ঘর ভাড়া নিয়েছিল তারা। এখানে থাকার তার আসল উদ্দেশ্য কী, সে ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। বেলডাঙার মক্রমপুরে একটি মসজিদের ইমাম হিসেবে কাজ করত সেলিম। পাশাপাশি শিক্ষকতা করত একটি মাদ্রাসায়। সেখান থেকে পাওয়া  অর্থেই সংসার চলত তাদের। তার মা সারাদিন গৃহবন্দি থেকে ঘরের কাজ করতেন। তবে সেলিমের মা আগেই পুলিসকে জানিয়েছিল, আমার স্বামী মারা গিয়েছে অনেক বছর আগে। বাংলাদেশে আমাদের কোনও বাড়ি নেই। আমার শ্বশুরবাড়ি ছিল বিহারে। ছেলের সঙ্গে বেলডাঙায় অনেক দিন ধরে আছি। তবে হঠাৎ করে কেন ছেলে বাংলাদেশে যাচ্ছিল, তা জানি না। ওকে যে বিএসএফ ধরেছে, সে খবরও আমি পাইনি। তবে, পরে পুলিসি জেরায় ভেঙে পড়ে সবকিছু বলে দেয় সে। বাংলাদেশ থেকে কি উদ্দেশ্য নিয়ে সেলিম এখানে এসেছিল সে ব্যাপারে জানার চেষ্টা করছে পুলিসের আধিকারিকরা।  স্থানীয় মহিলারা বলেন, সেলিমের মা বাড়ির বাইরে বের হতো না। কারও সঙ্গে কথা বলত না। কখনই ওকে আমরা বাড়ির বাইরে দেখিনি। কেন গা ঢাকা দিয়ে এখানে ছিল, সেটা খতিয়ে দেখা হোক। ওদের গতিবিধি ছিল খুবই সন্দেহজনক।
  • Link to this news (বর্তমান)