• ১৬ ঘণ্টা দেরিতে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস, দীঘাগামী ট্রেনে চরম ভোগান্তি
    বর্তমান | ২১ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: দীঘাগামী সকালের তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস ১৬ঘণ্টা দেরিতে মাঝরাতে হাওড়া থেকে ছাড়ল। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার যাত্রাপথ পেরিয়ে ভোর সাড়ে ৫টায় পৌঁছল দীঘায়। ট্রেন থেকে নামলেন হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী। কিছুক্ষণ পর সেই এক্সপ্রেস ফের রওনা দিল হাওড়ার উদ্দেশে। এবার যাত্রী সংখ্যা নেই বললেই চলে। মঙ্গলবার তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস এভাবেই প্রায় যাত্রীশূন্য অবস্থায় আপ ও ডাউনে গন্তব্যস্থলে পৌঁছল। লাইনে কাজ চলায় গত কয়েকদিন ধরেই হাওড়া-খড়্গপুর মেন লাইন এবং বিভিন্ন শাখা লাইনে অস্বাভাবিক দেরিতে ট্রেন চলছে। লোকাল থেকে এক্সপ্রেস প্রায় সব ট্রেনের যাত্রীরা ভুক্তভোগী। তবে, পর্যটনের ভরা মরশুমে হাওড়া-দীঘা তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস যেভাবে প্রায় খালি অবস্থায় ছুটল তাতে রেলের ক্ষতির পরিমাণ নেহাত কম নয়। দক্ষিণ পূর্ব রেলের সিপিআরও ওমপ্রকাশ চরণ বলেন, সাঁতরাগাছিতে কাজের জন্য বেশকিছু ট্রেন বাতিল ও সময়সূচি বদল হয়েছে। বুধবার থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

    হাওড়া থেকে রোজ সকাল ৬টা ৪৫মিনিটে ছাড়ে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস। ইদানীং সপ্তাহের কোনওদিনই ওই ট্রেন সময়সূচি মেনে ছাড়ে না। সপ্তাহে দু’দিন রেলের পক্ষ থেকে সময়সূচি পরিবর্তন করা হয়। সোমবার সময়সূচি বদল করে রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সকাল পৌনে ৭টার পরিবর্তে রাত ১০টা ৫মিনিটে ছাড়বে। অর্থাৎ ১৫ঘণ্টা লেট। যাঁরা ওই ট্রেনে চড়ে দীঘা আসার পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা সমস্যায় পড়েন। সেই ট্রেন সোমবার রাত ১১টা ৪৭মিনিটে হাওড়া থেকে ছাড়ে। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার জার্নি শেষে ভোর সাড়ে ৫টায় দীঘায় পৌঁছয়। 

    এই মুহূর্তে দীঘায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসছেন। জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই ভিড় বেড়েছে। সহজে দীঘা আসার জন্য অনেকেই ট্রেন পছন্দ করেন। কিন্তু, সময়সূচি অনুযায়ী ট্রেন না চলায় প্রচণ্ড সমস্যা হচ্ছে। সোমবার তমলুক স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের সামনে প্রবল বিক্ষোভ হয়েছে। রেলপথে সহজে দীঘা যাওয়ার এই দুর্ভোগ কবে মিটবে সেই অপেক্ষায় রয়েছেন পর্যটকরা।

    গত ৯এপ্রিল থেকে রোজ সকাল ১১টায় পাঁশকুড়া থেকে দীঘাগামী একটি স্পেশাল ট্রেন চলছে। অনেকেই বলছেন, ওই ট্রেনের সময় আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা এগিয়ে দিলে অনেকটাই সুবিধা হয়। অর্থাৎ সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে পাঁশকুড়া থেকে ছাড়লে কিছুটা আগে দীঘায় পৌঁছনো সম্ভব হয়। পাঁশকুড়া-হলদিয়া-দীঘা সাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সরোজ ঘড়া বলেন, লোকাল থেকে এক্সপ্রেস সমস্ত ট্রেন দেরিতে চলছে। এর ফলে যাত্রীরা ভীষণ অসুবিধায় পড়ছেন। তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন হাতে গোনা যাত্রী নিয়ে চললে রেলেরই ক্ষতি। এই সমস্যার সমাধানে রেল কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে। সেইসঙ্গে পাঁশকুড়া-দীঘা স্পেশাল ট্রেনটি দু’মাসের জন্য চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও আমাদের দাবি, এটি নিয়মিত করা হোক। তাতে অনেক মানুষের উপকার হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)