• সাক্ষ্য দিতে ডাকা হোক প্রাক্তন বিচারপতিকেও, আর্জি রাজ্যের এজি’র, প্রাথমিক মামলা
    বর্তমান | ২১ মে ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় রায় দেওয়ার আগেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন এক প্রাক্তন বিচারপতি। তাই তাঁকে এবার সাক্ষী দিতে ডাকা হোক আদালতে। মঙ্গলবার হাইকোর্টে এই মামলার শুনানিতে এই দাবি করলেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত। তাঁর ইঙ্গিত যাঁর দিকে, সেই তদানীন্তন বিচারপতি তথা বর্তমান সাংসদ রায় ঘোষণার আগেই বিধায়কদের ঘুষ খাওয়া এবং প্রাথমিকে নিয়োগের প্রতিটি ধাপে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। এটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাখ্যা বলেও মন্তব্য করেছেন কিশোর দত্ত। তাঁর বক্তব্য, দুর্নীতির কোনও প্রমাণ নেই। আর তা হয়ে থাকলেও, তার তথ্যপ্রমাণ প্রয়োজন। বার বার দুর্নীতির কথা বললে, তা প্রমাণিত সত্য হয়ে যায় না।

    এই মামলার রায়ের উপর নির্ভর করে রয়েছে প্রায় ৪২ হাজার চাকরিরত প্রাথমিক শিক্ষকের পেশাগত ভবিষ্যত। তাই রাজ্যও প্রথম থেকেই ফ্রন্টফুটে খেলে গিয়েছে। এজি বলেন, সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে এটি যদি ধরে নেওয়া যায় দুর্নীতি হয়েছে, তা পর্ষদ স্বীকার করে না। প্রায় এক লক্ষ ২০ হাজার প্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। নিয়োগের পরে অসফল প্রার্থীদের আবেদন ছিল, যেহেতু বেশ কিছু অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীকে নিয়োগ করা হয়েছে, তাই তাঁদেরও নিয়োগ করা হোক। কখনওই দুর্নীতির অভিযোগে গোটা প্যানেল বাতিলের দাবি ছিল না। সেখানে একজন বিচারপতি কীভাবে বলেন যে টেট ২০১৪ বড় ধরনের দুর্নীতি? কীভাবেই বা একজন বিচারপতি আদালতে তাঁর ব্যক্তিগত ধারণার প্রতিফলন দিতে পারেন? নিশ্চয়ই তিনি কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে তা করেছিলেন। এজির বক্তব্য, দুর্নীতি খোঁজা আসলে আইনের পরিপন্থী। দুর্নীতি আগে চিহ্নিত করে তারপর প্রমাণ করতে হয়।

    প্রসঙ্গত, এজি তাঁর সওয়ালে এও মনে করিয়ে দেন, সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত এই নিয়োগে দুর্নীতির কথা বলেনি। অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়নি ইন্টারভিউ বোর্ডে বেআইনি বা প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন, এই অভিযোগে প্যানেল বাতিল করার কথাও বলা হয়নি। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, বর্তমান বিজেপি সাংসদ বিচারপতি থাকাকালীন যে গরমাগরম বিবৃতি দিতেন, সেই প্যাঁচেই তাঁকে ধরতে চাইছে সরকার পক্ষ। তিনি বর্তমানে বিরোধী দলের সাংসদ হওয়ায় বিচারপতি থাকাকালীন তাঁর অনেক পর্যবেক্ষণ এবং রায় যে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট ছিল, তা প্রমাণ করতে তৎপর রাজ্য। প্রাথমিকে তাঁর দেওয়া রায়কেও সেই পদ্ধতিতেই মোকাবিলা করা হচ্ছে। আদালত ১২ জুন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)