ভারতে সংগঠন চালাতে ট্রাস্টের মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছে লস্কর, গোয়েন্দাদের হাতে নয়া তথ্য
বর্তমান | ২১ মে ২০২৫
শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: জঙ্গি প্রশিক্ষণ ও স্লিপার সেল চালানোর জন্য পাক মদতপুষ্ট লস্কর-ই-তোইবা ‘রহমত ট্রাস্ট’এর মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে টাকা পাঠাচ্ছে। ট্রাস্টের সদর দপ্তর পাকিস্তানের মুরিদকেতে। অপারেশন সিন্দুরের প্রথমদিনে লস্করের সদর দপ্তর বলে পরিচিত মুরিদকে ধ্বংস হয়েছে ভারতের এয়ার স্ট্রাইকে। লস্কর বাংলাদেশ ও নেপালের হ্যান্ডেলারদের মাধ্যমে সংগঠনের এখানকার মাথাদের কাছে টাকা পাঠাচ্ছে। ওই ট্রাস্টের শাখা খোলা হয়েছে একাধিক জায়গায়। এই তথ্য হাতে এসেছে গোয়েন্দাদের। ইতিমধ্যেই এই উত্তর ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে রহমত ট্রাস্টের অফিসে তল্লাশি হয়েছে বলে খবর।
পাকিস্তানে একের পর জঙ্গি ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়ার পর এদেশে সক্রিয় লস্করের মাথাদের ধরতে তৎপর জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আড়ি পেতে তদন্তকারীরা জানতে পারছেন, ভারতে লস্কর নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্বে রয়েছে আরিফ কাসমানি। কোথায়,কী ধরনের প্রশিক্ষণ হবে,কারা প্রশিক্ষণ দেবে, সব নির্দেশ পাঠাচ্ছে কাসমানি। বাংলাদেশে লস্করের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাসমানি এপারে পাঠাচ্ছে প্রশিক্ষণের জন্য। গোয়েন্দারা জানতে পারছেন, লস্কর এই রাজ্যের সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় একাধিক খারিজি মাদ্রাসায় প্রশিক্ষণ শিবির খুলেছে। তবে কাসমানি ভারতে ঘুরে গিয়ে গিয়েছে কি না, সেই তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চলছে।
কিন্তু দেশ জুড়ে সংগঠন চালানোর জন্য তহবিল আসছে কোথা থেকে, সেটাই জানার চেষ্টা করছিলেন গোয়েন্দারা। যাতে অর্থের জোগান বন্ধ করে লস্করের সংগঠন ভেঙে দেওয়া যায়। এনআইএ’র কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে হাজি মহম্মদ আশরাফ এখন তহবিল দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে। তার একাধিক গ্রুপ রয়েছে। যেখানে কোন দেশকে কত টাকা দেওয়া হবে তার বিষয় উল্লেখ করা হয়। কিন্তু টাকা সরাসরি এখানকার লস্কর জঙ্গিদের হাতে আসছে না। এরজন্য রহমত ট্রাস্ট নামে একটি সংস্থা খুলেছে লস্কর। যার মাথায় রয়েছে সাজ্জাদ উসমান। বিভিন্ন সামাজিক কাজকর্মের জন্য খোলা এই ট্রাস্টের আড়ালে বিভিন্ন জায়গায় লস্কর সংগঠনের কাছে টাকা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও নেপালে এই ট্রাস্টের একাধিক অফিস খোলা হয়েছে বলে খবর গোয়েন্দাদের কাছে। পাকিস্তান থেকে টাকা আসছে এই দুই দেশে। সেখান থেকে টাকা পৌঁচ্ছছে ভারতের সক্রিয় লস্কর জঙ্গিদের কাছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী এই ট্রাস্টের অফিস রয়েছে জম্মু-কাশ্মীরেও। এই অর্থেই জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির চালানো আগ্নেয়াস্ত্র কেনা হচ্ছে বলে খবর। গোয়েন্দারা টাকার মূল উৎসকে চিহ্নিত করে ফেলেছেন। তার ভিত্তিতে ওই ট্রাস্টের সদস্যদের খুঁজে বের করার পাশাপাশি কারা টাকা পৌঁছে দিচ্ছে, সেটি চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে।